বুদ্ধিদীপ্ত থাকতে চাইলে আয়োডিনযুক্ত লবণ খাওয়া জরুরি

বুদ্ধিদীপ্ত থাকতে হলে অবশ্যই নিজেকে আয়োডিনযুক্ত লবণ খেতে হবে। সুস্থ বুদ্ধিদীপ্ত সন্তান পেতে হলে? অন্তঃসত্ত্বা নারীকে আয়োডিনযুক্ত লবণ খাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা ছাড়া বিকল্প নেই। আয়োডিনই শিশুর মস্তিষ্ক গঠনের অন্যতম পুষ্টি উপাদান। যার প্রধান উৎস মাটি এবং পানি হলেও চাহিদা পূরণে আমাদের দেশে লবণের সাথে আয়োডিনযুক্ত করা হয়। আয়োডিনহীন লবণ মানুষের খাওয়ার জন্যই শুধু নয়, পশুখাদ্য হিসেবেও বিক্রি করা নিষেধ এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।
আয়োডিন এমনই পুষ্টি উপাদান যা শরীরিক বৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশ ঘটায়। শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য গর্ভাবস্থা, শৈশব ও কৈশোরকালে আয়োডিন খুব বেশ ঈস্খয়োজন। মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের স্বাভাবিক বিকাশ ও কার্যকর করার জন্য অয়োডিন অপরিহার্য। আয়োডিন থাইরয়েড, হরমন তৈরি করে। যা রক্তের মাধ্যমে চলাচল করে দেহের বিভিন্ন অংশের প্রতিক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে। এই জরুরি ও অতীব প্রয়োজনীয় উপাদনের চাহিদা পূরণে সরকার লবণের মাধ্যমে সকলের মাঝে পৌঁছুতে গত শতকের শেষ দশকের শুরুর দিক থেকে সরকারিভাবে নানা কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। এরপরও উৎপাদনের সময় লবণে আয়োডিন নির্দিষ্ট পরিমাণ মতো মিশ্রণে শতভাগ যেমন নিশ্চিত করা যাচ্ছে না, তেমনই আয়োডিন অতীব প্রয়োজনীয় হলেও আমাদের অনেকেই তথা আমরা সচেতনতার অভাবে তথা না জানার কারণে অনেকেই এ বিষয়ে অতোটা যবান হচ্ছি না। সঙ্গত প্রশ্ন- আয়োডিনমুক্ত নাকি আয়োডিনযুুক্ত লবণ তা বুঝবো কীভাবে? সহজ প্রশ্নের জবাবও সহজ। আয়োডিন টেস্টিং কিটস দিয়ে পরীক্ষা করা তো যায়ই, ঘরে বসে নিজস্ব কিটস দিয়ে তথা বিশেষ পদ্ধতিতেও পরীক্ষা করা জটিল কিছু নয়। একটি চা চামচে লবণ নিয়ে চামচের ওপরে উঁচু হয়ে থাকা অংশ ফেলে গুণে ৫টি ভাত নিয়ে ওই লবণের সাথে চটকে মাখিয়ে লেবুর দু’ফোটা রস দিলে বেগুনি বর্ণ পাওয়া গেলে ধরে নিতে হবে ওই লবণে আয়োডিন আছে। অন্যথায় নেই। তাছাড়া আয়োডিনযুক্ত লবণ রাখার ক্ষেত্রেও বিশেষ সতর্ক হওয়া দরকার। মুখ আটকানো পাত্রে রাখার বিষয়টিও অতীব গুরুত্বপূর্ণ।
আয়োডিনযুক্ত লবণ খাওয়ার বিষয়ে সকলকে নিজেদের স্বার্থেই বেশি বেশি দায়িত্বশীল হতে হবে। ‘বুদ্ধিদীপ্ত থাকতে চাই, আয়োডিনযুক্ত লবণ খাই’ স্লোগানকে সামনে নিয়ে বিশেষ প্রচারাভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ অভিযান ত্বরান্বিত করতে ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানসহ জনপ্রতিনিধিদের সংশ্লিষ্ট করা হয়েছে। জেলা উপজেলা প্রশাসনের তরফে আয়োডিনযুক্ত লবণের বদলে আয়োডিনমুক্ত লবণ বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে কি-না তাও নিশ্চিত করার বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে।