বিশুদ্ধ পানীয় পানির সংকট তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে

পরিসংখ্যানে যাই বলা হোক, বাস্তবে নিরাপদ পানির জন্য হাহাকার ক্রমশ বাড়ছেই। বিশেষ করে উপকূলবর্তী দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অবস্থা খুবই খারাপ। চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরের চিত্র? বহু গ্রামবাসীকে বাধ্য হয়েই আর্সেনিক নামক বিষপান করতে হচ্ছে। আর্সেনিকজনিত রোগে ভুগে ধীরে ধীরে ঝুঁকতে হচ্ছে অকাল মৃত্যুর দিকে।
একসময় নিরাপদ পানির জন্য প্রধানত পুকুর-নদী, হাওর-বাঁওড় ও পাহাড়ি ঝরনাসহ ভূপৃষ্ঠের যেসব উৎসে ওপর নির্ভর করতে হতো, তা কালক্রমে বদলে গেছে। ফলে যতো দিন যাচ্ছে, বিকল্প হিসেবে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর চাপ ততোই বাড়ছে। ক্রমবর্ধমান এই চাপের কারণে শুধু যে পানির স্তর নিম্নগামী হচ্ছে তা নয়, নতুন বিপদ হিসাবে ফনা তুলেছে আর্সেনিক। প্রাণঘাতী আর্সেনিকের এই বিষ ইতোমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে দেশের অধিকাংশ এলাকায়। সম্প্রতি ঢাকায় অনুষ্ঠিত জাতীয় পানি সম্মেলনে বলা হয়েছে, বিগত এক দশকে ৬১টি জেলায় যতো টিউবওয়েল বসানো হয়েছে, তার ৩০ শতাংশই স্থাপিত হয়েছে অত্যাধিক আর্সেনিকযুক্ত এলাকায়। বহুদিন ধরেই চুয়াডাঙ্গা মেহেরপুরের কয়েকটি এলাকাবাসীকে আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছে। বেশ ককেজন মারাও গেছেন। এরপরও বিশুদ্ধ পানীয় পানির জোগান প্রত্যাশিতভাবে মিলছে না।
দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা বিশুদ্ধ পানীয় পানির সংকটের ভয়াবহতা নীতিনির্ধারক মহল অবশ্যই অবগত। সুস্পষ্ট ধারণাও রয়েছে তাদের। এরপরও বাস্তবমুখি তেমন পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। ফলে সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পানি সংকট সমাধানে বাস্তবমুখি পদক্ষেপ প্রয়োজন।