বিদ্যুতের দাম বাড়লে জনগণের নাভিশ্বাস উঠবে

বিদ্যুত আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের আবশ্যকীয় অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দৈনন্দিন জীবন তো বটেই, শিল্প কারখানা, ব্যবসা-বাণিজ্য ও উৎপাদন ব্যবস্থায় বিদ্যুত অপরিহার্য। ফলে বিদ্যুতের দাম দেশের মানুষের সার্বিক জীবনযাত্রার সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িত। বৃহস্পতিবার এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ওপর যে শুনানি করা হয়, ভোক্তার আপত্তি আমলে নেয়া প্রয়োজন। শুনানিতে বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) পক্ষ থেকে যে ২৩ দশমিক ২৭ শতাংশ দর বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে, একই সঙ্গে কমিশনের মূল্যায়ন কমিটি বিদ্যুতের দাম যে ১৯ দশমিক ৫০ শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ করেছে, তাতেও উদ্বিগ্ন। এমনিতেই এখন বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়তি; তার ওপর বিদ্যুতের দাম বাড়লে জনগণের নাভিশ্বাস উঠবে। আগামী বছর বিদ্যুতের দাম না বাড়ালে পিডিবি যে সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা লোকসানের কথা বলছে, তা হয়তো ঠিক। এ সঙ্গে এটাও ঠিক, বিদ্যুতের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। বিদ্যুতে উদ্বৃত্ত রয়েছে আমাদের। আমাদের বিদ্যুত চাহিদা ১২-১৩ হাজার মেগাওয়াট হলেও উৎপাদন সক্ষমতা রয়েছে ১৯ হাজার মেগাওয়াটের। চাহিদা না থাকায় উদ্বৃত্ত বিদ্যুত কেবল অলসই পড়ে থাকছে না, উল্টো সরকারের গচ্চা যাচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকা। কুইক রেন্টাল থেকে বেশি দামে বিদ্যুত কেনাসহ এসব বিদ্যুতকেন্দ্রের নবায়ন ও চাহিদা না থাকা সত্ত্বেও নতুন করে বিদুতকেন্দ্রের অনুমোদন দেয়ায় সরকারের খরচ বাড়ছে। দশ বছরে ৬বার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে বলে সম্প্রতি জাতীয় সংসদে বলেছেন বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রী। এমনিতেই এর আগে গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে। এখন এক লাফে বিদ্যুতের দাম বাড়লে তা মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবেই দেখা দেবে। বিদ্যুতের দাম না বাড়িয়ে বরং তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত খরচ কমানোর দিকে নজর দেয়া প্রয়োজন।