বাল্যবিয়ে রোধে সামাজিক আন্দোলন হোক আরো বেগবান

বাল্যবিয়ে সামাজিক ব্যাধি। অনেক অভিভাবক বাল্যবিয়ের কুফল জেনেও উত্ত্যক্তকারীদের উৎপাতে অতিষ্ঠ হয়ে মেয়েকে অপ্রাপ্ত বয়সেই বিয়ের পিঁড়িতে বসান। অবশ্য অনেকেই আছেন না বুঝেই বাল্যবিয়ের বলি দেন কন্যাকে। ফলে বাল্যবিয়ে রোধে সচেতনতার আলো ছড়ানোর পাশাপাশি সমাজ থেকে উত্ত্যক্তকারীও উচ্ছেদে সকলকে আন্তরিক হওয়া প্রয়োজন।

 

অবশ্যই বিয়ের আয়োজনের আগেই বাল্যবিয়ে প্রবণতা রোধে দায়িত্বশীলদের আন্তরিক হওয়া দরকার। বিয়ের আয়োজন করবে তারপর তা ভেস্তে দেয়ার চেয়ে অপ্রাপ্ত বয়সে কোনো ছেলে-মেয়ের বিয়ের আয়োজন করবে না, এরকমই মানসিকতা গড়তে হবে। এ জন্য সমাজের বখাটেশ্রেণি ছেলেরা যারা পথেঘাটে উত্ত্যক্ত করে তাদের সুপথে ফেরাতে হবে। এদেরকে সুপথে ফেরাতে পারলে তথা সচেতন করতে পারলে সমাজ যে অধিক লাভবান হবে তা বলাই বাহুল্য। উত্ত্যক্তকারীদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক শাস্তির আইন বিদ্যমান। কেন তারা উত্ত্যক্তকারী? বিষয়টি ভাবতে হবে। উঠতিবয়সীরা কেন বিভ্রান্ত হয়ে বিপথে পা বাড়ায়? কেন তাদের মধ্যে অপরাধ প্রবণতা পেয়ে বসে? এসব প্রশ্নের জবাব খুঁজে তাদেরকে সুপথে রাখার বাস্তবমুখি পদক্ষেপ প্রয়োজন নয় কি?

 

গণমাধ্যমগুলো বিশেষ করে বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে যেসব গণমাধ্যম সমাজকে সচেতন করতে পারে তাদেরকেই অধিক দায়িত্বশীল হওয়া প্রয়োজন। গানে নাটকে সিনেমায় যদি নায়ককে উত্ত্যক্তকারীর ভূমিকায় দেখা যায় তা হলে উঠতিবয়সীদের মধ্যে সেই প্রবণতা পেয়ে বসা অমূলক নয়। তাছাড়া উত্ত্যক্তকারীদের তো সচেতন করার দায়িত্ব সমাজের সচেতনমহলের ওপরই বর্তায়। তবে এটা অস্বীকার করা যাবে না যে, সমাজ থেকে শ্রদ্ধাবোধ যেন উধাও হয়ে গেছে। উত্ত্যক্তকারীদের শাসন করতে গেলে অনেকেরই উল্টো হামলার শিকারও হতে হয়। এরকম উদাহরণও রয়েছে। তাই বলে নীরব দর্শকের ভূমিকায় থাকলে তো আর সমাজ সুন্দর হবে না। ওরাও তো সমাজেরই কারো না কারো সন্তান।

 

বাল্যবিয়ে রোধে ইতোমধ্যেই সামাজিক আন্দোলন গড়ে উঠেছে। সমাজের সচেতনমহল ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাসমূহের পাশাপাশি বেসরকারি উন্নয়নমূলক সংস্থাসমূহের দায়িত্বশীলতা চলমান এ আন্দোলনকে নিশ্চয় বেগবান করবে। প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌর পরিষদের সকলকে দায়িত্বশীল হতে হবে। ভুয়া জন্মসনদ দাতাসহ জন্মসনদ ছাড়া বিয়ে সম্পাদন করা কাজির উপযুক্ত শাস্তিও নিশ্চিত করতে হবে।