বন্ধ হোক ক্ষমতার দ্বন্দ্বে : ক্ষমতার লিপ্সায় অন্ধদের উন্মত্ততা

এভাবে আর কতোদিন? এ প্রশ্ন এখন দেশের আমজনতার। নীতিহীন রাজনীতির চলমান সন্ত্রাসকে নাশকতাই বলি আর সহিংসতাই বলি, এর দায় কি দেশের বৃহত দুটি রাজনৈতিকদলের কোনোটিই এড়াতে পারে? জনগণের নামে জনগণকে পোড়ানোর রাজনীতি থেকে সব পক্ষকেই নিবৃত্ত হতে হবে। দেশের অর্থনীতিকে বাঁচাতে হবে। বাঁচাতে হবে দেশটাকে। দেশের মানুষ না বাঁচলে রাজনীতি কার জন্য? ক্ষমতায় থাকা বা ক্ষমতায় যাওয়ার রশি টানাটানিতে দেশের আমজনতা যে চিড়ে চেপটা তা উপলব্ধি এখন খুবই জরুরি।

হাসপাতালে অগ্নিদগ্ধরা তাদের আর্তচিৎকারে জোড় হাতে আকুতি জানাচ্ছে ‘দয়া করে আর কাউকে পোড়াবেন না।’ অবরোধ কর্মসূচির এক পক্ষ অতিক্রান্ত হয়েছে। সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ‘জাতিসংঘের মধ্যস্থতা মানবে না সরকার’ এবং ‘ফল নিয়েই ফিরবে বিএনপি।’ বোমায় পুড়ছে সাধারণ মানুষ, পুড়ছে আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব পালনরত পুলিশ। সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন, এভাবে আর কতোদিন? সাবেক এক রাষ্ট্রপতি প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন, ‘জনগণ ক্ষমতার উৎস’ বলে দাবি করেন তো সেই জনগণকে পুড়িয়ে মারছেন কেন?’ বলেছেন, একটি দল জনগণকে জিম্মি করে বোমা মেরে ক্ষমতায় যেতে চায়। আর সরকার তা চেয়ে চেয়ে দেখছে। প্রবীণ একজন প্রবাসী কলামিস্ট বলেছেন, ‘বিএনপি ভীষ্মের শরশয্যা গ্রহণের মতো ইচ্ছামৃত্যুর পথ ধরে সংঘাতের রাজনীতিতে লিপ্ত রয়েছে। আন্দোলন নেই আছে বিক্ষিপ্ত সন্ত্রাস।’ আমরা যারা এই দেশে বধ্যভূমির অনুভূতি ও বাস্তবতা নিয়ে প্রতিদিনের জীবনযাপন করছি তারা দেখছি- দেশের যুধ্যমান রাজনীতিই মূলত, ভীষ্মের শরশয্যায় ইচ্ছামৃত্যুর অভীপ্সায় নেতিবাচক পথে ধাবিত।

প্রসঙ্গত: ফ্রান্সে কয়েকজন বিপথগামী সন্ত্রাসীর গুলিতে একটি পত্রিকা অফিসের ১২ জন কর্মীর মৃত্যুতে সন্ত্রাসের প্রতিবাদে লাখ লাখ জনতা যোগ দিয়েছেন সংহতি সমাবেশে। সেই সমাবেশে যোগ দিয়েছে চিরশত্রু ইসরাইল ও প্যালেস্টাইনের নেতারা পর্যন্ত। আর এই মৃতচিন্তার দেশ, বাংলাদেশে আগুনে পোড়া নিরীহ দরিদ্র শ্রমজীবী মানুষের মৃত্যুতে প্রতিবাদ জানানোর মতো মানুষেরও দেখা মিলছে না। ক্ষমতার দ্বন্দ্বে, ক্ষমতার লিপ্সায় অন্ধদের উন্মত্ত পদদলনে নিষ্পিষ্ট হওয়া সত্ত্বেও। বন্ধ হোক এ হানাহানি। বন্ধ করুন বড়াই-লড়াই।