বকশিশ পেয়ে অভ্যস্তদের আচরণে যখন উগ্রতা

এক সময়ের খুশি হয়ে দেয়া বকশিশ এখন শুধু রেওয়াজই হয়ে দাঁড়ায়নি, কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা বাধ্য-বাধকতায় রূপ নিয়েছে। বিশেষ করে সরকারি, বেসরকারি হাসপতালের প্রসূতি বিভাগে বকশিশ আদায়ের কিছু চিত্র ছিনতাইয়ের সাথে তুলনা করলেও খুব একটা ভুল হয় না। সঙ্গতঃ প্রশ্ন- এসবের জন্য দায়ী কে? আদায়কারীদের যতোটা তার চেয়ে দিয়ে দিয়ে ওদের অভ্যস্ত করে তোলা সমাজেরও কি কম দোষ?
খুশি হয়ে খুশির আবাহ আকাশে বাতাসে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য কিছু ছড়ানোর মধ্যে নিশ্চয় ক্ষতির কিছু নেই। কিন্তু সেই ছড়ানো যে সকলের পক্ষে সর্বক্ষেত্রে সম্ভব নয় তা কুড়িয়ে পকেট ভরে অভ্যস্ত ব্যক্তিরা এক সময় তা ভুলে যায়। তা না হলে সরকারি হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে কর্মরত সেবিকা ও আয়াদের অধিকাংশেরই বকশিশ আদায়ে উঠে পড়ে লাগতে দেখা যায় কেন। এ বিষয়ে নালিশের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। দায়িত্ব পালনের জন্য অবশ্যই উপযুক্ত বেতন বোনাস দেয়া হয়, এরপরও উপরি আয়ে অভ্যস্ত হয়ে পড়ার আড়ালে লুকিয়ে থাকে দাপ্তরিক ও সামাজিক সুযোগ। এক সময় দাদা তার পুতি, নানা তার নাতি হওয়ার খুশিতে মিষ্টি মুখ করাতেন সকলকেই। সেই মিষ্টিই এক সময় বকশিশে রূপান্তর হওয়ার পর তা কালক্রমে কেড়ে নেয়ার রেওয়াজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দিতে না পারলে ছোট লোক অপবাদই শুধু ভাগ্যে জুটছে না, যাচ্ছে তাই পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
বকশিশ শুধু যে হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে তা নয়, শহর-বন্দরের আবাসিক ও খাওয়ার হোটেলে যেমন, তেমনই বাস-ট্রেন-লঞ্চ ও স্টিমারে হুকুম তালিম করা ব্যক্তিদের মধ্যেও পাওয়ার প্রত্যাশা বেড়েই চলেছে। এ প্রত্যশা পূরণে ন্যূনতম কার্পণ্যে ওদের কালোমুখই শুধু দেখতে হয় না, উগ্র আচরণে অপদস্থ হওয়ার আশঙ্কাও যেন বেড়েই চলেছে। ফলে টিপস বকশিশ দেয়া- নেয়ার রেওয়াজ রুখতে সকলকেই সজাগ হওয়া দরকার।