প্রসঙ্গ: ধর্মসভায় ধর্মীয় পোশাকে মনগড়া গল্প

একটি ধর্মীয় সভায়, ধর্মীয় লেবাসে ধর্মের অজুহাতে জলজ্যান্ত মিথ্যা বলে যখন কোনো ব্যক্তি পার পায় তখন সমাজের সচেতনতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা অমূলক নয়। শুধু তাই নয়, একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বার্ষিক ওয়াজ মাহফিলে বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে যে ব্যক্তিকে হাজির করা হয় তার সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা না থাকা অবশ্যই অদক্ষতা।

চুয়াডাঙ্গা আলুকদিয়া আকন্দবাড়িয়া মোহাম্মদীয়া বহুমুখি মাদরাসা প্রাঙ্গণে বার্ষিক ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এই ওয়াজ মাহফিলে প্রধান আকর্ষণ হিসেবে প্রচার করা হয় যাকে তার নাম আল হাজ আব্দুর রাজ্জাক চৌধুরী। তার দাবি তিনি পূর্বে নারী ছিলেন। পরে পুরুষ হয়েছেন। নারী থাকাকালে তার সন্তান রয়েছে, পুরুষ হওয়ার পর বর্তমান সংসারেও এসেছে সন্তান। কীভাবে তিনি নারী থেকে পুরুষ হলেন? সে প্রশ্নের জবাবও দিয়েছেন মনগড়া। বলেছেন, শাশুড়ির নির্যাতনে বাড়ির রান্নাঘরের সামনে বসেছিলাম। হঠাত কয়েকজন বুজুর্গ ব্যক্তি এসে নিয়ে গেলেন। এরপর কী হয়েছে জানি না। পুরুষ হয়ে গেছি। মুহূর্তেই মুখে দাঁড়ি-গোফ গজিয়ে যায়। ওই সময় পত্রপত্রিকাতেও নাকি তাকে নিয়ে খবর প্রচার হয়।’ ইসলাম ধর্মের লেবাসে, ইসলাম ধর্ম প্রচার সভায় এ ধরনের মনগড়া গল্প বলে ইসলামকেই কি ক্ষতিগ্রস্ত করলো না? হতেও তো পারে বলে যারা তাকে সমর্থন করেন, তাদের ইসলাম ধর্মের জ্ঞানের গভীরতা অবশ্যই প্রশ্নবিদ্ধ। কেননা, এ ধরনের ঘটনা ঘটে বা ঘটতে পারে বলাও ইসলাম ধর্ম সমর্থন করে না। তাহলে ওই ব্যক্তি মনগড়া গল্প বলে পার পেলো কীভাবে?

ইসলাম ধর্ম যেমন শান্তির ধর্ম, তেমনই নির্দেশনাতেও রয়েছে স্বচ্ছতা। মিথ্যাকে কোনোভাবেই প্রশ্রয় দেয়া হয়নি। সর্বক্ষেত্রেই মিথ্যাকে পাপ বলা হয়েছে। মিথ্যা বা কোনো প্রকার ছলনার মাধ্যমে ইসলাম ধর্ম প্রচার মানে ইসলামকেই কলুষিত করা। এদিকে ইসলামী চিন্তাবিদদের বাড়তি সতর্কতা দরকার। দরকার দায়িত্বশীলতা।