প্রসঙ্গ ॥ মা-মেয়েকে খুঁটির সাথে বেঁধে নির্মম নির্যাতন

অবশ্যই কারো ঘরের চালে ভূত-পেতœী বা জিন-পরী ঢিল ছোড়ে না। কেউ না কেউ নিক্ষেপ করে। তাই বলে সন্দেহের বশে কি কাউকে ধরে বেঁধে মারপিট করা যায়? আন্দাজে কাউকে দোষারোপ করাই যখন অন্যায়, তখন প্রতিবেশী মা-মেয়েকে ধরে ঘরের খুঁটির সাথে রশি দিয়ে বেঁধে নির্যাতন করা কতোটা অপরাধ? তাছাড়া যে সমাজে এ ধরনের ঘটনা ঘটে সেই সমাজের সভ্যতা নিয়েও প্রশ্ন ওঠা অমূলক নয় নিশ্চয়।
চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গার জামজামি ইউনিয়নের ঘোষবিলা গ্রামের যে প্রতিবেশীদের মধ্যে ঘরের চালে ইট নিক্ষেপ নিয়ে বিরোধ দানা বেঁধেছে, ঘটানো হয়েছে অমানবিক ঘটনা, ওই প্রতিবেশীর অধিকাংশই দারিদ্র্যসীমার নিচের বাসিন্দা। পরিবারগুলোর কর্তাদের কেউ করেন দিনমজুরি, কেউ ঝাঁটা-বাড়–ন বেঁধে ফেরি করেন গ্রামে গ্রামে। ফলে দরিদ্র এ পরিবারগুলোর মধ্যে সচেতনতায় ঘাটতি থাকা অমূলক নয়। সন্দেহের বশে পেশিশক্তি প্রয়োগ তারই কুফল। তাই বলে পাড়া বা মহল্লার সকলেই তো আর বোকা নন। তাছাড়া মা-মেয়েকে ধরে খুঁটির সাথে বেঁধে নির্যাতন তো আর একজন-দুজন করেননি। করেছেন বেশ ক’জন। খবর পেয়ে পুলিশ তড়িত উদ্ধার করেছে। অন্যথায় প্রাণহানিও অসম্ভব ছিলো না। নির্যাতনের খবর পত্রস্থ হওয়ার পর পুলিশের পদস্থ কর্মকর্তা নিশ্চয় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। মামলা হয়েছে।
ঘরের টিনের চালে ইট নিক্ষেপ নিশ্চয় কোনো মতলববাজের অপকর্ম। শান্ত পরিবেশ অশান্ত করতেই কি এরকম চক্রান্ত? নাকি নিজের ঘরে নিজে ইট মেরে একের পর এক প্রতিবেশীকে দোষারোপ করা? সুষ্ঠু তদন্ত প্রয়োজন। তার আগে মা-মেয়েকে খুঁটির সাথে বেঁধে নির্যাতনকারীদের ধরে আইনে সোপর্দ করে সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক উচিত শাস্তির বিষয়টিও নিশ্চিত করা দরকার। অন্যথায় অসভ্যতার পেশিশক্তি গ্রাস করবে পুরো সমাজ।