পুলিশ হোক জনগণের আস্থাবৃদ্ধির মতো সক্রিয়

ঝিনাইদহে খুন লেগেই রয়েছে। খুন, পাল্টা খুন, রাজনৈতিক সহিংসতা জনপদকে রক্তাক্ত করে তুলছে। একের পর এক খুন হলেও খুনিদের অধিকাংশই ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। খুনের পাশাপাশি চাঁদাবাজি হচ্ছে। অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায়েরও খবর পাওয়া যাচ্ছে। পড়শি জেলা ঝিনাইদহের আইনশৃঙ্খলার অবনতির আঁচ চুয়াডাঙ্গাতেও যে পড়ছে না তাও নয়। সম্প্রতি চুয়াডাঙ্গার কুতুবপুর এলাকায় অপহরণ নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।

 

ঝিনাইদহ, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া অঞ্চল দীর্ঘদিন ধরেই সন্ত্রাস কবলিত হিসেবে চিহ্নিত ছিলো। ৱ্যাব-পুলিশের লাগাতার অনমনীয় সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে ভয়াবহ শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা থেকে এলাকাবাসী মুক্ত হলেও সন্ত্রাস যেন পিছু ছাড়েনি। উন্নয়নশীল দেশে সন্ত্রাস সমূলে উৎপাটন প্রায় অসম্ভব হলেও তা দমিয়ে রাখার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসমূহ ও এলাকাবাসীর সম্মিলিত প্রচেষ্টাই যথেষ্ট। পুলিশ কখনোই এককভাবে আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে সক্ষমতা দেখাতে পারেনি। পুলিশ যখনই এলাকাবাসীর আস্থা অর্জনের মতো দায়িত্ব পালনে আন্তরিক হয়েছে তখনই পদে পদে সফলতা মিলেছে। অপ্রতুলতা প্রসঙ্গ তখন চাপা পড়ে গেছে। যখনই অনিয়ম দুর্নীতি ও কর্তব্যহীনতা বেড়ে গেছে তখনই জনগণ সহযোগিতা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, ফুটে উঠেছে ব্যর্থতা। ব্যর্থতা আড়াল করতেই সামনে উঠে এসেছে অপ্রতুলতা। অপরাধমূলক ঘটনা ঘটার পরে অপরাধীর পিছু নেয়ার চেয়ে গোপন সংবাদদাতা নিয়োগের মাধ্যমে অপরাধীদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করার আগেই ধরে আইনে সোপর্দ করার মতো সফলতা দেখতে চায় শান্তিপ্রিয় এলাকাবাসী। এ জন্য এলাকাবাসীকেও নিজ নিজ এলাকা সন্ত্রাসমুক্ত করতে ও রাখতে আন্তরিক হতে হয়।

 

পুলিশে অপ্রতুলতা তথা লোকবল ও যানবাহনের সংকট অস্বীকার করা না গেলেও নানা সময়ে এ পুলিশেরই পারদর্শিতা প্রশংসনীয় হয়ে উঠে। আবার অনিয়ম দুর্নীতি কর্তব্যপালনে গাফিলতিরও নজির মেলে। পুলিশ জনগণের নিরাপত্তার প্রতীক, নিরাপদ আশ্রয়স্থল। পুলিশকে পারতে হবে। জনগণের আস্থাবৃদ্ধির মতো সক্রিয়তা আইনশৃঙ্খলা উন্নতিতে আনবে সফলতা। খুনের পর খুন, অব্যাহতভাবে চাঁদাবাজি, ডাকাতি ছিনতাই রোধে কর্তব্যপরায়ণতাই কাম্য।