পাশেই প্রতারক : বিশ্বাসের মাপকাঠি সাথেই রাখুন

সর্বস্তরেই নিরাপত্তার ঝুঁকি বেড়েছে। যন্ত্রযান নিয়ে রাস্তায় ভাড়া মারতে বের হয়ে সুহালে ফেরার কোনো নিশ্চয়তা নেই। সড়কে দুর্ঘটনা যেমন স্বাভাবিক মৃত্যুর অধিকার কেড়ে নিয়েছে, তেমনই প্রতারক ছিনতাইকারীদের অপতৎপরতা সর্বক্ষেত্রেই যেন নিরাপত্তাহীনতার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে শ্যালোইঞ্জিনচালিত অবৈধ যান নিয়ে রাস্তায় বের হয়ে বিপদ যেন নিঃশ্বাস ছাড়ে ঘাড়ের ওপর। আর ব্যাটারিচালিত তিন চাকার ইজিবাইক? এটা তো খুনি ছিনতাইকারীদের পছন্দের শীর্ষে। কারণ এসবে না থাকে ইঞ্জিন নম্বর, না থাকে শনাক্তের চ্যাসিস নম্বর। রেজিস্ট্রেশন না থাকাই মূলত ছিনতাইকারীরা সুযোগ নিচ্ছে। যদিও রেজিস্ট্রেশনভুক্ত মোটরসাইকেল চুরি করে চোখের পলকে চোরচক্র তা বেমালুম হজম করে তুলছে তৃপ্তির ঢেকুর। ফের খুঁজছে সুযোগ।
চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর সড়কের ভালাইপুর মোড় থেকে কয়েকজন প্রতারক ছিনতাইকারী শ্যালোইঞ্জিনচালিত আলমসাধু ভাড়ায় নিয়ে দামুড়হুদার নির্জন সড়কে নেয়। সেখানে নিয়ে মাথায় হাতুড়ি দিয়ে মেরে মুমূর্ষু অবস্থায় চালককে ফেলে রেখে আলমসাধুটি ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়েছে। এ ঘটনা এটাই জেলায় বা দেশে প্রথম নয়। এর আগেও এ ধরনের ছিনতাই ও চালককে হত্যা করে ইজিবাইক ছিনিয়ে নিয়ে লাপাত্তা হওয়ার ঘটনা চুয়াডাঙ্গায় ঘটেছে। মামলা হলেও ছিনতাইকারীদের তেমন শনাক্ত করা কি সম্ভব হয়েছে? অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মূলহোতা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকে যায় বলেই যে অভিন্ন অপরাধমূলক ঘটনা বৃদ্ধি পায় তা বলাই বাহুল্য। ফলে অবৈধযান হলেও ছিনতাই, খুনের ঘটনা কোনোভাবেই খাটো করে দেখা উচিত হবে না। কালবিল¤œ না করে অপরাধীদের ধরে আইনে সোপর্দ করার পাশাপাশি পর্যাপ্ত গোপন সংবাদদাতা নিযুক্ত করে অপরাধমূলক ঘটনা ঘটনানোর আগেই অপরাধীকে ধরার মতো পুলিশি সক্ষমতা অর্জনে সকল অপ্রতুলতা দূর করতে হবে। অবশ্য বর্তমান সরকার সে লক্ষ্যে নানামুখি পিদক্ষেপ নিয়েছে।
শুধু আলমসাধু বা ইজিবাইক চালকদেরই নয়, পথে বের হলে সকলকেই বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। কালের বিবর্তনে বর্তমানে বাংলার সমাজ থেকেই যেন বিশ্বাস উবে যাওয়ার উপক্রম, পথে-ঘাটে, হাট-বাজার বা বাস-ট্রেন, লঞ্চ-স্টিমার থেকে সেটা কবেই তো হারিয়ে গেছে। ফলে সকলকেই সব সময়ই মনে রাখতে হয়, আশপাশেই ঘুরঘুর করছে প্রতারকচক্র। সুযোগ পেলেই করবে সর্বনাশ। আর লোভের টোপে পড়েছেন তো মরেছেন। বিশেষ করে অস্বাভাবিক কোনো প্রস্তাবে সাড়া দেয়ার আগে বর্তমান বাস্তবতার আলোকে বিশ্বাসের মাপকাঠিতে ফেলে মেপে নিয়েই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া দরকার। সমাজের সকলে এরকম সচেতন হলে আর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাসমূহে কর্তব্যরত কর্তারা কর্তব্যপরায়ণ হলে নিশ্চয় বদলে যাবে দৃশ্যপট।