পাশবিক নির্যাতনের শেষ কোথায়?

নানা ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এবং অপরাধের প্রবণতা যেন দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। পত্রপত্রিকার গুম, হত্যাকাণ্ডের মতো ভয়াবহ ঘটনা ছাড়াও প্রতিনিয়তই সামনে আসছে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনা। আবার এটাও স্পষ্ট যে, বিভিন্ন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার প্রতিবাদে সোচ্চার সংগঠন থেকে শুরু করে সরকারও। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক বাস্তবতা হলো, কিছুতেই দুর্বৃত্তদের লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না। এ পরিস্থিতিতে সরকারকে গভীর পর্যবেক্ষণসাপেক্ষে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করার বিকল্প নেই। ভুলে যাওয়া যাবে না, দেশের বিভিন্ন স্থানে যেভাবে একের পর এক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটছে তার পরিপ্রেক্ষিতে সঠিক পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হলে, এর খেসারত দিতে হবে চড়া মূল্যে।

সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেলো, বাড়ি থেকে ক্যাডার দিয়ে তুলে নিয়ে গিয়ে এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করেছেন বগুড়ার শহর শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক তুফান সরকার। তথ্যমতে, ধর্ষণ করার পর বিষয়টি ধামাচাপা দিতে দলীয় ক্যাডার ও এক নারী কাউন্সিলরকে ধর্ষণের শিকার মেয়েটির পেছনে লেলিয়ে দেন। গত শুক্রবার বিকেলে তারা কিশোরী ও তার মাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে চার ঘণ্টা ধরে নির্যাতন চালান। এরপর দুজনেরই মাথা ন্যাড়া করে দেন। যখন একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রে এই ধরনের ঘটনা ঘটছে তখন তার ভয়াবহতা আমলে না নিলে এর প্রভাব ছড়িয়ে পড়বে সর্বত্র, বসবাসের স্বাভাবিকতাই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠবে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বগুড়ার পুলিশ সুপার বলেছেন, কিশোরী ও তার মায়ের প্রতি যে আচরণ করা হয়েছে, তা মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানায়। এর পেছনে যতো বড় রাঘববোয়ালই থাকুক না কেন, কেউ রক্ষা পাবে না। পুরো ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে যতো দ্রুত সম্ভব দোষীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। এভাবে একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা ঘটতে থাকবে এটা কোনো সভ্য দেশের জন্য গ্রহণযোগ্য বিষয় নয়।

এখন সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার এই ঘটনার ভয়াবহতাকে আমলে নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করা। এরকম ঘৃণ্য ও বর্বর ঘটনা এবারই প্রথম নয়, এর আগেও ঘটেছে। ফলে যদি বার বার এ ধরনের ঘটনা ঘটতে থাকে তবে এর প্রভাব কতোটা ভয়ঙ্কর তা আমলে নিতে হবে। এড়ানো যাবে না যে, মানুষের সমাজে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ না হলে নিরাপত্তাহীনতায় মানসিক রোগ থেকে শুরু করে নানা ধরনের বিপত্তি সৃষ্টি হতে পারে। যা মানুষের জীবনের স্বাভাবিকতাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করবে। এবারের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি দুর্বৃত্তদের যেকোনো তৎপরতা বন্ধে সংশ্লিষ্টরা প্রয়োজনে সর্বোচ্চ কঠোর হতে হবে।