পারতে হবে, ঘোচাতে হবে না পাওয়ার কষ্ট

 

দেশে বিদ্যুতের ঘাটতি নেই বলে যে দাবি করা হয় তা অন্য কোথাও অতোটা অবিশ্বাস্য না হলেও চুয়াডাঙ্গার বিদ্যুতগ্রাহক সাধারণ মানতে রাজি নন। চুয়াডাঙ্গায় যেমন অসহনীয় ভ্যাপসা গরম, তেমনই বিদ্যুতের অবর্ণনীয় লোডশেডিং। দিনে-রাতে যেন সমান তালে লোডশেডিং। এ বিষয়ে ওজোপাডিকোর চুয়াডাঙ্গা বিতরণ বিভাগের কর্তাদের উক্তি-যখন যেটুকু বিদ্যুত পাওয়া যায় তখন সেটুকু বিতরণ করা হয়। যখন চাহিদার কম বিদ্যুত মেলে তখন লোডশেডিং বাড়ে। তবে মেহেরপুরে ব্যতিক্রমের কারণ হলো- বাড়তি তদবিরে মেহেরপুরের নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুত সরবরাহের নির্দেশনায় বাড়তি সুযোগ ভোগ। সে হিসেবে চুয়াডাঙ্গা অবশ্যই হতভাগা।

বিগত দিনের তুলনায় দেশে বিদ্যুত উৎপাদন যে বহুলাংশে বেড়েছে তা নতুন করে বলার অবকাশ রাখে না। চাহিদা পূরণে দেশে বিদ্যুত উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি পড়শী দেশ থেকে তা কেনাও হচ্ছে। এরপরও ঘাটতির চিত্র ফুটে ওঠে মূলত চাহিদা ক্রমবৃদ্ধির কারণে। বিদ্যুত যখন উৎপাদন তখনই ব্যবহার করতে হয়। মজুদের সুযোগ নেই। তবে উৎপাদনকেন্দ্র প্রস্তুত করতে পারলে উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা সম্ভব। যেহেতু বিদ্যুত এখন উন্নয়নে ও উন্নত জীবনযাপনে অপরিহার্য। সরকার বিদ্যুত উৎপাদন ও বিতরণে আন্তরিক। তা না হলে গত কয়েক বছরে গরমের সময় দেশের কোথাও বিদ্যুতের জন্য আন্দোলন সংগ্রাম হয়নি। চুয়াডাঙ্গায় অবশ্য মাঝে মাঝে বিদ্যুতের বেহালদশায় গ্রাহক সাধারণের ক্ষোভ পুঞ্জিভূত হওয়ার খবর পত্রস্থ হয়। গতকালও দৈনিক মাথাভাঙ্গার প্রথম পাতায় তার খণ্ডচিত্র তুলে ধরা  হয়েছে। বলা হয়েছে, সোমবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চাহিদার অর্ধেকেরও কম বরাদ্দ পাওয়া যায়। সন্ধ্যায় চাহিদামতো পাওয়া গেলেও রাতে বিদ্যুত ঘাটতির প্রভাব চুয়াডাঙ্গার গ্রাহকদের ভোগ করতে হয়। তাছাড়া দিনে-রাতে লোভোল্টেজ সমস্যা তো লেগেই আছে। অথচ চুয়াডাঙ্গা মেহেরপুরে মান সম্পন্ন বিদ্যুত বিতরণ নিশ্চিত করতে জাফরপুরে স্থাপন করা হয়েছে ৩২ কেভি সাবগ্রিড স্টেশন।

অবশ্যই উন্নয়নে অন্যতম শর্ত হলো কলকারখানা স্থাপন। কারখানার চাকা ঘোরানোর শক্তির যোগান না পেলে তা স্থাপনে বিনিয়োগকারীরা আগ্রহী হবেন কেন? যদিও কিছু উদ্যোক্তা নিজেদের চেষ্টায় ছোট-বড় কলকারখানা স্থাপনের মাধ্যমে সৃষ্টি করেছেন কর্মসংস্থান। বিদ্যুত সংকট লেগে থাকলে তা যে টেকসই হয় না তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ রয়েছে চুয়াডাঙ্গায়। ছোট-বড় কলকারখানার উৎপাদন অব্যাহত রাখার মাধ্যমে তা টেকাতে হলে চাকা ঘোরানোর শক্তি তথা বিদ্যুত সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। বাড়তি তদবিরে পড়শী জেলা যদি সেটা নিশ্চিত করতে পারে তাহলে চুয়াডাঙ্গা কেন পারবে না? পারতে হবে। ঘোচাতে হবে না পাওয়ার কষ্ট।