পবিত্র হজ নিয়ে আপত্তিকর উক্তি এবং সরকার

 

সকলেরই ব্যক্তিগত মতামত প্রকাশের অধিকার আছে। তবে অন্যের অধিকার ক্ষুণ্ণ করে নয়। এটা যে ব্যক্তি জানেন না, সেই ব্যক্তির মন্ত্রিত্ব দেয়া এবং রাখা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা অমূলক নয়। তাই বলে, প্রশ্ন তুলে আন্দোলনের নামে হঠকারিতা? শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশি গুলি? এ চিত্র সভ্য দেশের নয়।

 

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী মহানবী (স.), পবিত্র হজ ও তাবলিগ জামায়াত নিয়ে কটুক্তি করে দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষকে উসকে দিয়েছেন। কেন? তিনি কি মন্ত্রিত্ব হারানোর পাশাপাশি প্রবাসেই থেকে যাওয়ার পরিকল্পনা করেই এটা করেছেন? ইসলাম ধর্মে ৪ স্তম্ভের হজ অন্যতম। তা নিয়ে আপত্তিকর উক্তির প্রতিবাদ করার অধিকার সাধারণ মানুষের রয়েছে। তাবলিগ সম্পর্কে আপত্তিকর উক্তিও ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের ক্ষুব্ধ করেছে। এর প্রতিবাদে সারাদেশেই রাজপথে নেমেছে মানুষ। যশোরে গুলি ছুড়েছে পুলিশ। ঝিনাইদহসহ বেশ কিছু স্থানে আন্দোলনকারীদের মিছিল, মানববন্ধনে বাধাও দেয়া হয়েছে। বাধাদানের বা গুলিবর্ষণের পক্ষেও বাধাদানকারী তথা গুলিবর্ষণকারীদের কাছে যুক্তি আছে। খুনিও যখন যুক্তি তুলতে ছাড়ে না, তখন আন্দোলনে বাধাদানের যুক্তি থাকবে না কেন? অবশ্যই আন্দোলনের নামে হঠকারিতা, বিশৃঙ্খলারোধে পুলিশ পদক্ষেপ নেবে। বিশৃঙ্খলা কেন, গুলিবর্ষণই বা কেন? বিশৃঙ্খলা হঠকারিতা যেমন ঘোলাপানিতে মাছ শিকারের জন্য চক্রান্তেরই অংশ হতে পারে। পুলিশের গুলিবর্ষণও অতিমাত্রা তোষামোদ কুফল নয় কি? সঙ্গত কারণেই এ প্রশ্নকে অমূলক বলে উড়িয়ে দেয়া যায় না। কারণ পুলিশের মধ্যে পেশাদারত্বের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া ভার। ন্যায়ের পূজারির বদলে পক্ষপাত দুষ্টে পুরো সংস্থাটাই আস্থা সংকটে হাবুডুবু খাচ্ছে। বিশ্বাস ক্রমশ তলানির দিকে। আন্দোলনের নামেও দেশবাসীকে মাঝে মাঝে যা দেখতে হয় তা দেখে চক্রান্ত প্রসঙ্গটি ঘুরে ফিরে আসে। সে কারণে নেতৃত্বদানকারীদের দায়িত্বশীলতা তথা সতর্কতা নিয়েও সন্দেহের ঘুণ ন্যায় প্রত্যাশীদের আত্মবিশ্বাসকেও কুরে কুরে খাচ্ছে।

 

পবিত্র হজব্রত নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন লতিফ সিদ্দিকী তা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত বলে অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে। আইনের আশ্রয়ও নিয়েছেন অনেকে। মন্ত্রিপরিষদ থেকে বাদ দেয়ার পাশাপাশি তাকে গ্রেফতার করে বিচারের দাবিও জানানো হয়েছে। সরকারকে যথাসময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত।