নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে

 

আউশের ভরা মরসুম চলছে অথচ ১৪ দিন ধরে গুদাম থেকে সার তুলতে পারছেন না কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহের ডিলাররা। এতে এ দুই জেলার বহু কৃষক সময়মতো সার না পাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন। কৃষক সময়মতো সার না পেলে আউশ উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে। এমনিতেই হাওর অঞ্চলে আকস্মিক বন্যায় বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কেবল সরকারি হিসাবেই ৬ লাখ টন বোরো উৎপাদন ঘাটতি রয়েছে। এর ওপর সারের কারণে আউশ উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হলে চালের বাজার আরও অস্থির হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। বর্তমানে বিশ্বের যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি দামে মোটা চাল কিনতে হচ্ছে দেশবাসীকে। এ অবস্থায় চলতি আউশ মরসুমে উৎপাদন যাতে কোনোভাবেই ব্যাহত না হয় সেটা নিশ্চিত করতে সার ও বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করার বিকল্প নেই।

টেন্ডারে শ্রমিক সরবরাহের কাজ না পাওয়ায় কুষ্টিয়ার বাফার গুদাম থেকে সার তুলতে দিচ্ছেন না সরকারদলীয় স্থানীয় প্রভাবশালী এক নেতা। তার বাধার কারণে সর্বনিম্ন দরদাতা হয়েও কাজ পাওয়া ঠিকাদার গুদামে ঢুকতে পারছেন না। ফলে বিসিআইসির কুষ্টিয়া বাফার গুদামের ডিলাররা পে-অর্ডার করে বসে থেকেও সার পাচ্ছেন না। কয়েকদিন পরই ঈদের বন্ধ এ অবস্থায় দ্রুত এ সমস্যার সমাধান না হলে দীর্ঘমেয়াদে সার উত্তোলন বন্ধ থাকার প্রভাব মোকাবেলা করা কঠিনই হবে। কারণ ভরা মরসুম ছাড়াও ইউরিয়া সারের চাহিদা সবসময়ই কৃষকের থাকে। আমরা মনে করি, সার সরবরাহে বাধাদানকারীদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি যেকোনো মূল্যে দ্রুত নিরবচ্ছিন্ন সার সরবরাহ নিশ্চিত করা দরকার। অন্যথায় যে কোনো দুর্ঘটনার দায় সংশ্লিষ্টদেরই নিতে হবে। ঠিকাদারদের বিভিন্ন কারসাজি ও সংশ্লিষ্ট অসাধু কিছু কর্মকর্তার গাফিলতির কারণে সরকার ও দেশবাসীকে ভোগান্তির শিকার হতে হয়। ঠিকাদার ও পাউবো কর্মকর্তাদের অনিয়ম-দুর্নীতি ও গাফিলতির কারণেই বাঁধ ভেঙে আগাম বন্যায় লাখ লাখ টন বোরো ধান তলিয়ে যাওয়ার দৃষ্টান্ত তো চোখের সামনেই রয়েছে।

যেকোনো সমস্যায় পতিত হওয়ার পরই আমাদের হুঁশ হয়। সার উত্তোলনে বাধার ক্ষেত্রেও যেন তেমনটি না ঘটে এবং সংশ্লিষ্টদের বোধদয় যেন বড় দুর্ঘটনার আগেই হয়, তা নিশ্চিত হওয়া দরকার। কেবল কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহেই নয়, সারাদেশের সব সার গুদাম থেকে ডিলারদের কাছে নিরবচ্ছিন্ন সার সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ ইতিবাচক হলে সারের অভাবে আউশ ও অন্য ফসলের সমস্যা হবে না বলে আশা করা যায়।