দুর্ঘটনাকে নিছক দুর্ঘটনা বলার যুগও গত বহু আগে

 

 

ধরিত্রীর বুকে যা কিছু আছে তার সবই কোনো না কোনোভাবে মানব জাতির কল্যাণে কাজে লাগে। সামান্য অসতর্কতায় তা ক্ষতিরও কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যেমন একটি সজনের ডাল কেড়ে নিলো তরতাজা এক শিশুর প্রাণ। বর্ষায় শুধু সজনের ডালই ভেঙে পড়ে না, রাস্তার ধারের বড় বড় শক্তগাছের মরাডালও পড়ে পথচারীদের রক্তঝরায়। অন্ধ করে। উদাহরণ রয়েছে। যে সজনের ফুল সবজি হিসেবে যেমন অতুলনীয়, তেমনই ডাটা তরকারি মানব দেহের জন্য অত্যন্ত দরকারি। বাড়ির আঙিনায়, মাঠে জমির আইলসহ নানা স্থানেই সজনে গাছ লাগানো হয়। কোনো কোনো এলাকায় সজনের গাছে ভরিয়ে সজনে অঞ্চল বলেও ঘোষণা দেয়া হয় মূলত উপকারি বলেই। এই উপকারি গাছ আমড়া গাছের চেয়েও মড়কা। আমড়ার গুড়ি দিয়ে যেমন হয় না ঢেঁকি, তেমনই সজনের গুঁড়িও। নরম বলেই পোকা ধরে। আর তাতেই ডেকে আনে বিপত্তি। আগেভাগে নজর দিলে মানুষের গায়ের ওপর নিশ্চয় ভেঙে পড়তো না, ঘটতো না প্রাণহানীর ঘটনা। শুধু সড়কের ধারে সজনে গাছ নয়, সরকারি সড়কের ধারে থাকা অনেক গাছ রয়েছে, যার কিছু ডাল গুঁড়ি পথচারীদের জন্য হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এসব অপসারণেও দায়িত্বশীলদের বিশেষ নজর রাখা দরকার। চুয়াডাঙ্গার প্রধান প্রধান সড়কের ধারে থাকা বড়বড় গাছের বহু ডাল শুকিয়ে ঝুঁকি হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। চুয়াডাঙ্গা বড়বাজার পুরাতনগলির ভেতরের একটি বুড়ো বটগাছ বহুদিন ধরেই ভেঙে পড়বে পড়বে অবস্থায়। এসব কেটে নতুন করে গাছ লাগানোর তেমন উদ্যোগ পরিলক্ষিত না হলেও কখনো কখনো বড় বড় তাজা ভালো সুস্থ গাছ কেটে উজাড়ের দৃশ্য আমজনতার চোখে পড়ে।   ‘সজনের ডালে প্রতিবেশীর শিশু সন্তান মরেছে, নিজের তো কিছু হয়নি!’ এরকম ভেবে সামাজিক দায়বদ্ধতা এড়ানো অবশ্যই আহম্মুকি। অন্যের সন্তানের স্থলে ওই গৃহকর্তা নিজেও তো পড়ে মরতে পারতেন। তাছাড়া দুর্ঘটনাকে নিছক দুর্ঘটনা বলার যুগও বহু আগে গত হয়েছে। বিবেক জাগিয়ে যৌক্তিক সতর্কতা অবশ্যই সহজতর করে জীবনযুদ্ধ।