তারা দ্রুত আসুক শাস্তির আওতায়

 

সুন্দরবনের শ্যালা নদীতে তেল ট্যাঙ্কার দুর্ঘটনার খবর কেবল বাংলাদেশে নয়, বিশ্বের পরিবেশবাদীদের মধ্যেও উৎকণ্ঠা সৃষ্টি করেছে। কেন এ দুর্ঘটনা ঘটল এবং এজন্য কে বা কারা দায়ী, সেটা নিয়ে চলছে অনুসন্ধান। পরিবেশ মন্ত্রণালয় দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে গঠন করেছিলো বিশেষ কমিটি। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের সূত্র উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ট্যাঙ্কারটি তেল বহনের উপযুক্ত ছিলো না। ফলে আরেকটি নৌযানের সামান্য আঘাতেই এটি ফেটে যায়। আমাদের একটি কৌতুকধর্মী গল্প জানা আছে। তার সারকথা হচ্ছে এভাবে : একটি রাজকীয় অনুষ্ঠানে সময়মতো কামান দাগানো হয়নি। কেন হয়নি, সেটা নিয়ে তদন্ত কমিটির সামনে হাজির হয়ে সংশ্লিষ্ট এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, এর একশ একটি কারণ রয়েছে। তাকে এক এক করে কারণগুলো বলতে বলা হলে তিনি বলেন, এক নম্বর হচ্ছে কামানের জন্য নির্দিষ্ট করে রাখা গোলাবারুদ ছিলো ভেজা। বলা বাহুল্য, এরপর দ্বিতীয়, তৃতীয় থেকে একশ একটি কারণ জানার প্রয়োজন পড়ে না। সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনার ব্যাপারে বিধি নিষেধ রয়েছে। এগুলো বলবৎ করার দায়িত্বও রয়েছে নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের। কিন্তু এ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতা স্পষ্ট। এখন তো দেখা যাচ্ছে গোড়াতেই গলদ। তেলবাহী যানবাহন সড়ক ও নৌপথে অতিমাত্রায় সতর্কতার সাথে চলাচল করার আইন রয়েছে। এ ধরনের প্রতিটি যানবাহনে ‘দাহ্য পদার্থ : দূরত্ব বজায় রাখুন’ লেখা থাকে। যে নৌযানটিতে ফার্নেস অয়েল পরিবহন করা হচ্ছিলো, সেটি অনুমোদিত নয়, কেবল এ তথ্যটিই অপরাধীকে চিহ্নিত করার জন্য যথেষ্ট।

পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেছেন, বিশ্ব প্রেক্ষাপটে এ দুর্ঘটনা নগণ্য, কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অনেক বড়। এ ঘটনায় শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বব্যাপি উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। বনের ক্ষয়ক্ষতি সীমিত রাখার জন্য এখন চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি চাই এমন বিপর্যয়ের জন্য দায়ীদের শাস্তি এবং সেটা হতে হবে দৃষ্টান্তমূলক। এমন দুর্ঘটনা না ঘটলেও এ ধরনের যানবাহনে তেল বহন গুরুতর অপরাধ। আমরা আশা করবো যে, কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে বের হয়ে আসুক বিষধর সাপ। এ ধরনের অপরাধ যারা নিয়মিত করে চলেছে, তারা দ্রুত আসুক শাস্তির আওতায়।