ডাকাতদলের অপতৎপরতা রুখতে অবশ্যই পুলিশই ভরসা

সম্পাদকীয়

চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ ও মেহেরপুরের বেশ কিছু এলাকায় ডাকাতদলের অপতৎপরতা আশঙ্কাজনকহারে বেড়েছে। রাতে অস্ত্রধারী অপরাধীদের তা-ব এতোটাই নৃশংস নির্মম যে তার বর্ণনা করার ভাষাও হারিয়ে ফেলছেন ডাকাতির শিকার পরিবার। চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের নবগঠিত নেহালপুর ও কালুপোল ইউনিয়নের প্রায় প্রতিটি গ্রামবাসীই এখন ডাকাত আতঙ্কে তটস্থ। কয়েকটি পরিবার ইতোমধ্যেই বাড়ি ঘর ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছে অন্যত্রে। ঘটনা প্রবাহ পুলিশকে কর্তব্যপরায়ণ হওয়ারই তাগিদ দিচ্ছে বারবার।
অবশ্যই চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহ এক সময় রক্তাক্ত জনপদ হিসেবে কুখ্যাতি বা কলঙ্ক নিয়ে চলেছে। রক্তের দাগ মুছতে অবশ্যই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাসমূহের কর্তব্যপরায়ণ হতে হয়েছে। অনমনীয় অভিযানের ফলে এলাকার বাঘাবাঘা সন্ত্রাসী, চরমপন্থিদের অনেকেরই পতন হয়েছে। কেউ কেউ জেলহাজতে বন্দি। এর সুফল এলাকাবাসী পেয়েছে, পাচ্ছে। ওদেরই অনেকেই মুক্ত হয়ে এলাকায় ফিরেছে। জেল থেকে পালিয়ে সোহাগের মতো ত্রাস দীর্ঘদিন ধরে পুলিশের চোখ এড়িয়ে দিব্যি ঘুরছে। এরই মাঝে ডাকাতদলের ভয়াবহ উৎপাত শুরু হয়েছে। বিশেষ করে চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের তিতুদহ, শঙ্করচন্দ্র ও বেগমপুর, ঝিনাইদহ জেলা সদরের সাগান্না, হলিধানীসহ পাশের এলাকায় সন্ধ্যা হলেই নেমে আসছে অজানা আতঙ্ক। প্রতিরাতেই কোথাও না কোথাও ডাকাতদল তা-ব চালাচ্ছে। এসব তা-বের কিছু অংশ পত্রিকার পাতায় উঠে এলেও এলাকাবাসীর প্রত্যাশা পুরণের মতো পুলিশি তৎপরতা পরিলক্ষিত হচ্ছে না। যদিও পুলিশের দাবি, ‘অভিযান তো চলছেই। কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।’ সঙ্গত প্রশ্ন- ডাকাতদলের সদস্যরা ধরা পড়লে ডাকাতি করছে কারা? প্রতিদিনতো আর ডাকাত গজায় না। পুলিশ ডাকাতদলের সর্দ্দারসহ সদস্য ও সহযোগীদের ধরে আইনে সোপর্দ করলে এলাকায় শুধু স্বস্তিই ফিরবে না, জনগণকে সহযোগী হিসেবে পাশে পাবে পুলিশ। আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক করতে এবং রাখতে সেটা খুবই জরুরি। অপ্রতুলতা বা অন্য অজুহাতে অক্ষমতা প্রকাশ পেলে সৃষ্টি হয় আস্থাহীনতা। ওটাই ডেকে আনে সর্বনাশ।
ঘটনা ঘটলে পুলিশ একটু নড়ে চড়ে বসে বটে, কয়েকজন ধরাও পড়ে। ডাকাতি করা মালামাল যেমন উদ্ধারের খবর মেলে না, তেমনই ডাকাতি করার বিষয়ে তেমন স্বীকারোক্তিও পাওয়া যায় না। অনেকেরই অভিযোগ, যাদেরকে সন্দেহভাজন হিসেবে ধরা হয় তাদের অধিকাংশেরই সাথে সত্যিকার ডাকাতদলের সম্পৃক্ততা থাকে বলে মনে হয় না। তাছাড়া ডাকাতি বা কোনো প্রকারের অপরাধমূলক ঘটনা ঘটার পরে নয়, পুলিশের তৎপরতা তো ঘটনা ঘটার আগেই হওয়াই উচিৎ। সেটাই শর্ত।