ট্রাক ভিড়িয়ে চুরি : চোর পাকড়াওয়ে পুলিশের পারদর্শিতা কাম্য

 

এক সময় সিঁদেল চুরি ছিলো। চোর কাঁচা মেরে গায়ে তেল মেখে সিঁদ কেটে ঘরে ঢুকে চুরি করতো। কালক্রমে চুরির ধরন পাল্টেছে। এখন? দোকানে ট্রাক ভিড়িয়ে তালা ভেঙে চুরি হয়। ট্রাক ভিড়িয়ে ৮৩ বস্তা চালসহ নগদ টাকা চুরির খবরটি চমকে ওঠার মতো হলেও চুয়াডাঙ্গারই জীবননগর উপজেলা শহরের লক্ষ্মীপুর মিল-চাতাল এলাকায় দুঃসাহসিক এ ঘটনা ঘটেছে। সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন- ট্রাক ভিড়িয়ে যখন চুরি হলো তখন নৈশপ্রহরী কোথায় ছিলো? নাকি নৈশপ্রহরী ছাড়াই দোকানি শীতের রাতে আয়েশ করে ঘুমিয়ে ছিলেন? যদিও নৈশপ্রহরীকে বেঁধে রেখেও এ ধরনের লুটপাট যে হয় না- তা নয়। হয়। হয় বলেই পুলিশের বাড়তি টহলসহ সজাগ নৈশপ্রহরী নিয়োগের তাগিদ সর্বদা সর্বস্তরে।

বিভিন্ন মিল কলকারখানায় উৎপাদিত পণ্য দিন-রাত যখন তখন ট্রাকে তুলে স্থানান্তর করা হয়। ব্যবসায়ীদের ভাষায় পণ্য চালান করা হয়। জীবননগর লক্ষ্মীপুর এলাকার মিল-চাতাল এলাকার ব্যবসায়ীর গোডাউনে ট্রাক ভিড়িয়ে চাল চুরির ক্ষেত্রে চোরের দল সম্ভবত সেই সুযোগটাই কাজে লাগিয়েছে। আশেপাশের লোকজন ভেবেছে চাল ব্যবসায়ী তার গোডাউনের চাল ট্রাকযোগে মোকামে চালান তথা রপ্তানি করছেন। তা না হলে একটি ট্রাকে অতোগুলো চালের বস্তা তো আর চোখের পলকে তুলতে পারেনি। এলাকার সাধারণ মানুষ যখন এমনটি ভেবে থাকতে পারে, তখন টহল পুলিশেরও এমনটি ভাবাটা অমূলক নয়। যদিও পুলিশ রাজনৈতিক উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে রাজপথ ঠেকাবে নাকি চুরি রোধে বিশেষ নজর দেবে সে প্রশ্নও অপ্রাসঙ্গিক নয়। তার ওপর পুলিশের রয়েছে অপ্রতুলতা। যা কোনোভাবেই অস্বীকার করার জো নেই।

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর লক্ষ্মীপুর মিল-চাতাল এলাকায় ট্রাক ভিড়িয়ে চাল চুরির পর পরই দোকানি জেনেছেন। তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশকে জানিয়েছেন। তারপরও কেন ট্রাকসহ চোর ধরা গেলো না? ট্রাকটি নিশ্চয় আকাশ দিয়ে উড়ে যায়নি। চালভর্তি ট্রাকটি সেখান থেকে সরিয়ে কোনো বিছানার লেপের আড়ালেও রাখা সম্ভব হয়নি। তা হলে পুলিশ উদ্ধার করতে পারছে না কেন? ট্রাকটি উদ্ধারে পুলিশের অপ্রতুলতার অজুহাত মেনে নেয়া বোধকরি বোকামি। চুরির পূর্বেই যখন চুরি রোধে পুলিশের পদক্ষেপ প্রয়োজন ছিলো তখন না হয় পারেনি অপ্রতুলতার কারণে। চুরির সময়ও না হয় রাজপথে ব্যস্ত সময় কাটিয়ে ক্লান্ত হয়েছিলো পুলিশ। চুরির পর? চোর পাকড়াওয়ে পুলিশের পারদর্শিতা কাম্য।