টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট বিশ্বকাপ এবং বাংলাদেশ দল

 

ভারতে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট বিশ্বকাপ খেলা চলছে। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল এখন ভারতেই অবস্থান করছে। আছে জাতীয় প্রমিলা ক্রিকেট দলও। বাংলাদেশ ক্রিকেট দল বিশ্ব টি-টোয়েন্টিতে সুপার টেনে উঠে পাকিস্তানের সাথে খেলেছে, হেরেছে। আজ বাংলাদেশ দল অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হচ্ছে। ঘুরে দাঁড়াবে বলেই প্রত্যাশা।

যে অস্ট্রেলিয়া নিরাপত্তার অজুহাতে বাংলাদেশে খেলতে আসেনি। এমনকি তাদের টিম বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত আইসিসি অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপেও অংশগ্রহণ নেয়নি। সেই অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে যখন মনপ্রাণ উজাড় করে খেলার জন্য প্রস্তুত, ঠিক তখনই দুঃসংবাদ। আইসিসি জানিয়েছে, বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষ বোলার আরাফাত সানি ও তাসকিন আহমেদের বোলিং অ্যাকশন অবৈধ। তাই এদের সব ধরনের বোলিং হতে নিষিদ্ধ করা হলো। বেশ কঠিন ও আশাহত এই ফরমান। আমরা হতবাক। সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন, তাহলে কি বাংলাদেশের স্বপ্ন ধুলিসাৎ হবে? শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ আজ ও আগামীর ম্যাচগুলোতে ভালোমতোই লড়াই করবে বলেই দেশবাসীর বিশ্বাস।

নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে ম্যাচ ঘিরে দুই শীর্ষ বোলারের নিষিদ্ধকরণের ফলে তারা এখন আর চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে পারবে না। পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে তারা বিসিবির অনুমতি সাপেক্ষে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতে পারলেও অ্যাকশন শুদ্ধ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বোলিং করতে পারবেন না। অবশ্য তাসকিনের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে বিসিবি এখনও আশাবাদী। কেননা, তাসকিন অবিচারের শিকার। যদিও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড এ দুজন বোলারের বদলি চেয়ে আইসিসির নিকট আবেদন করেছে। নতুন যারা ভারত যাচ্ছেন তাদের মধ্যে অফস্পিনার সানির বদলে বাঁহাতি স্পিনার সাকলাইন সজীব ও ডানহাতি পেসার তাসকিনের বদলে অফস্পিনার ও ব্যাটসম্যান শুভাগত হোম।

তাসকিনের চেন্নাইয়ে অনুষ্ঠিত পরীক্ষা পদ্ধতি ও রায় ত্রুটিমুক্ত নয়। এমনই অভিযোগ উত্থাপন হচ্ছে। কেননা পরীক্ষাগারে তার নিয়মিত বল (স্টক ডেলিভারি) ও ইয়র্কারকে বৈধ বলেছে আইসিসি। কেবল বাউন্সারকে বলেছে অবৈধ। আর এজন্য তাকে নিষিদ্ধ করা যায় না। কেবল সতর্ক করে দেয়ার বিধান আছে। কিন্তু এক্ষেত্রে কেন এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নেয়া হলো বোধগম্য নয় বলেই গতকাল সারাদেশের ক্রিকেটমোদীরা নামেন রাস্তায়। প্রতিবাদ জানান।

গতকাল বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপনের গুলশানের বাসায় বোর্ডের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বৈঠক হয়। সেখানে বলা হয়, বিসিবি তাসকিনের বোলিং অ্যাকশন নিয়ে আইসিসির এই নিষেধাজ্ঞা পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করবে। তা গৃহীত না হলে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের কথাও বলা হয়। গত ওয়ানডে বিশ্বকাপে ভারত-বাংলাদেশের ম্যাচে বাংলাদেশ অবিচারের শিকার হয়। এর প্রেক্ষিতে তত্কালীন আইসিসি সভাপতি আ.হ.ম মোস্তফা কামাল পদত্যাগ করেন। সেই অবিচারের ধারাবাহিকতায় এবারও বাংলাদেশ ক্রিকেটদল বড় ধরনের ক্ষতিগ্রস্ত হলো। যারা বাংলাদেশ দলের সম্প্রতি উন্নয়নে ঈর্ষান্বিত ও আতঙ্কিত, তারা এসবের পেছতে কোনো কলকাঠি নাড়ছে কি-না তা অপ্রকাশ্য, তবে বাংলাদেশ এসব চক্রান্ত মোকাবেলা করেই একদিন ক্রিকেটের শীর্ষ চূড়ায় উন্নীত হবে বলে আশা করা অবশ্যই অবান্তর নয়।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়, কোচ ও কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সকলের মনোবল হারানোর কোনো কারণ নেই। সুখ-দুঃখে সর্বদা তাদের পাশে দেশবাসী। তাদের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন রয়েছে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে শত বাধা চক্রান্ত ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে বাংলাদেশ দল ভালো করবে, গড়বে ইতিহাস। এ প্রত্যাশায় দেশবাসী।