চোখ উঠলে আতঙ্ক নয়- ডা. এমবি আজম

 

সাম্প্রতিক সময়ে অনেকের চোখ লাল হচ্ছে। দেশব্যাপি আবহাওয়ার অস্থিতিতাবস্থা জনিত কারণে এটার প্রাদুর্ভাব ঘটছে এবং খুব দ্রুত চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে। চিকিৎসাশাস্ত্রে এ রোগকে কনজাংটিভাইটিস বলে। এটা এক ধরনের খুবই ছোঁয়াচে রোগ। একজন থেকে অন্যজনে খুব দ্রুত সংক্রমিত হয়। আক্রান্ত ব্যক্তির হাত, ধরা বস্তু ও পানির মাধ্যমে রোগটি ছড়ায়। বর্তমানে রোগটি ব্যাকটেরিয়াজনিত হওয়ার কারণে স্বাভাবিকভাবেই কোনো নির্দিষ্ট এলাকার পরিসীমা মানছে না। কখনো কখনো রোগটি ভাইরাস, অ্যালার্জি কিংবা কেমিকেলের কারণেও হতে পারে। অনেকে চোখ লাল হলেই তা ভাইরাস বলে মনে করেন। তাই এবারও তারা তা মনে করছেন, কিন্তু না। ব্যাকটেরিয়াজনিত কারণে চোখ ওঠা বা লাল হওয়ার প্রধান উপসর্গের মধ্যে রয়েছে চোখের শাদা অংশ লাল হওয়া, সামান্য কিছুটা ঝাপসা দেখা, চোখ দিয়ে পানি পড়া, খচ্‌খচে ভাব অনুভূত হওয়া, চোখের কোণে ময়লা বা প্রচুর পিঁচুটি জমা এবং চোখের পাতা সামান্য ফোলা ফোলা ভাব উল্লেখযোগ্য। এজন্য দিনে চার-পাঁচবার স্বাভাবিক হালকা কুসুম কুসুম গরম পানি দিয়ে চোখ পরিষ্কার করতে হবে। ব্যাকটেরিয়াজনিত কারণে চোখ উঠলে কিংবা কয়েকদিনের বেশি স্থায়ী হলে এন্টিবায়োটিক চোখের ড্রপ ও মলম ব্যবহার করা যেতে পারে। ভাইরাসজনিত কারণে চোখ ওঠার নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই। ঠাণ্ডা পানি এবং কৃত্রিম চোখের পানি দিলে সুফল পাওয়া যায়। তবে ভাইরাসজনিত রোগ অনেক সময়ই কর্নিয়া বা চোখের ওপরের স্বচ্ছ পর্দার সংক্রমণের কারণ। যাতে দৃষ্টি ঝাপ্‌সা হয়ে যায় ও চিরদিনের জন্য তা কম দেখার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সেসব ক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে। চোখ উঠার ক্ষেত্রে কয়েকদিন পরও উপসর্গ না কমলে অথবা বাচ্চাদের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ চক্ষু চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তিনি কর্নিয়ার সংক্রমণ ও অন্যান্য অংশ পরীক্ষা করে চিকিৎসা প্রদান করবেন। তাই এই রোগ নিয়ে সত্যিই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। সুস্থ থাকুন।