চুয়াডাঙ্গা সদর আধুনিক হাসপাতালের পরিবেশ এবং সুচিকিৎসা

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের দিকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছেন। সরকারি হাসপাতাল সরকারের পাশাপাশি পৌরসভার পরিচ্ছন্নকর্মী দিয়ে যেমন পরিষ্কার করার কাজ করা হচ্ছে, তেমনই তহবিল গঠনের মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে সার্বিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে দু দফা বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়েছে। জাতীয় সংসদের হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপি ও চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়রসহ পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর আধুনিক হাসপাতালের উন্নয়ন যতো ত্বরান্বিত হবে, এলাকাবাসীর সুচিকিৎসা পাওয়ার অধিকার ততোই বাস্তবায়ন হবে। মিলবে স্বস্তি।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের পরিবেশ স্বাস্থ্যসম্মত করার বিশেষ উদ্যোগ বহু আগে থেকেই মাঝে মাঝে নেয়া হয়। উদ্যোগের সুফল স্থায়ী হয়নি। সম্প্রতিকালের মধ্যে হাসপাতালের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ ফেরানোর লক্ষ্যে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছিলেন সাবেক মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন। তিনি পৌরসভার মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে পৌরসভা থেকে পরিচ্ছন্নকর্মী নিযুক্ত করার পাশাপাশি রোগীর দর্শনার্থীদের হাসপাতালে প্রবেশের নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করে নিয়ম পালনের জন্য লোকবলও নিযুক্ত করেছিলেন। পরবর্তীতে বর্তমান মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপু নতুন করে হাসপাতালের পরিবেশ স্বাস্থ্যসম্মত করার সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি নিজে ঝাটা ধরে ঝাড়–দার তথা পরিচ্ছন্নকর্মীদের সাথে একত্মতা ঘোষণা করে বুঝিয়েছেন, কোনো কাজই ছোট নয়। তিনি হাসপাতালের তিনতলার প্রসূতি ও শিশু ওয়ার্ডের চিত্র পাল্টে দিয়ে নিচতলার দুর্গন্ধ দূর করে চিকিৎসা সেবাদানে নিযুক্ত ও সেবাগ্রহণকারীদের স্বস্তিতে নিঃশ্বাস নেয়ার ব্যবস্থা করে ইতোমধ্যে প্রশংসিতও হতে শুরু করেছেন। যদিও সৃষ্ট এ পরিবেশ ক’দিন ধরে রাখা সম্ভব হবে তা কে জানে? স্থায়ীত্ব নিয়ে সন্দেহ সঙ্গত। অবশ্য পৌর মেয়রের তরফে প্রতিশ্রুতি- সম্মিলিতভাবে পরিবেশ সুন্দর রাখার চেষ্টায় কমতি নেই। এছাড়া হাসপাতালের সার্বিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে বর্তমান সিভিল সার্জনের আহ্বানে জাতীয় সংসদের হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার এমপি যে উদ্যোগ নিয়েছেন তা সফল করতে পারলে সরকারি এ হাসপাতালটি দেশের অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি হবে। হয়ে উঠবে অনুকরণীয়।
চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরে চিকিৎসাসেবা পাওয়ার মূলত একমাত্র প্রতিষ্ঠান সদর আধুনিক হাসপাতাল। সরকারি ‘সবেধন এই নীলমনি’ ছাড়া বেসরকারিভাবে কিছু ক্লিনিক নার্সিং হোম থাকলেও তা পরিপূর্ণ মানসম্পন্ন চিকিৎসা সেবাদানের মতো করে গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি। চুয়াডাঙ্গার এই অপ্রতুলতা কবে কাটবে তা এখনই বলা কঠিন। ফলে সরকারি হাসপাতালে মানসম্পন্ন সুচিকিৎসার পাশাপাশি স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ গড়ে তোলার বিশেষ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাতেই হয়। তবে মনে রাখা দরকার, সরকারি হাসপাতালের শূন্যপদগুলো পূরণ ও কর্তব্যরতদের জবাবদিহিতার পাশাপাশি বরাদ্দকৃত ওষুধ পথ্যের সুব্যবহার নিশ্চিত করা অতিব জরুরি।