গরমে প্রয়োজনীয় ওষুধ গরমেই বরাদ্দ দেয়া উচিত

ষড়ঋতুর দেশ। কোন ঋতুতে কোথায় কি দরকার, তা নিশ্চয় দায়িত্বশীলদের অজানা নয়। তাহলে ভরা মরসুমে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে সাপের বিষ নিষ্ক্রিয় করা ভ্যাকসিন নেই কেন? গ্রীষ্ম ও বর্ষা মূলত সাপের উপদ্রব দেখা দেয়। ফলে এই দু ঋতুতে অ্যান্টি¯েœক ভেনম তথা সাপের বিষ নিষ্ক্রিয় করা ভ্যাকসিন হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত না রাখা মানে মানুষের চিকিৎসা পাওয়ার অধিকারকে অবজ্ঞা করা। অথচ এ অধিকার সাংবিধানিক অধিকার।
এক সময় সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসা মানেই ওঝা কবিরাজের নিকট নিয়ে সনাতন পদ্ধতির চিকিৎসাই ছিলো ভরসা। তখন বিষধর সাপে দংশন করে বিষ প্রয়োগ করলে রোগী বাঁচানো যেতো না। বিষধর নয়, বা বিষধর হলেও বিষপ্রয়োগ করতে পারেনি বা করেনি এমন রোগীর ক্ষেত্রেই ওঝা কবিরাজের মূলত জারিজুরি বাড়তো। বিজ্ঞানের আলো সমাজে যতোই ছড়িয়েছে, ওইসব অপচিকিৎসা ততোই সমাজ থেকে বিতাড়িত হয়েছে। যদিও আমাদের সমাজে এখনও সাপে কাটা রোগী নিয়ে ওঝা কবিরাজের দিন-রাত নাটক করতে দেখা যায়। এজন্য শুধু যে সচেতনতাই দায়ী তাও সর্বক্ষেত্রে বলা যায় না। কেননা, সাপে কাটা রোগী হাসপাতালে নেয়ার পরও চিকিৎসা না পাওয়ার শঙ্কা এখনও স্পষ্ট। মাঝে মাঝেই অ্যান্টি¯েœক ভেনম না থাকার কারণে সাপে কাটা রোগীর হাসপাতালে চিকিৎসা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে। রেফার করার খবর পাওয়া যায়। তাছাড়া চিকিৎসকের অভিজ্ঞতায় ঘাটতির বিষয়টিও কিছু কিছু ক্ষেত্রে ফুটে ওঠে। চুয়াডাঙ্গার পদ্মবিলা ইউনিয়ন পরিষদের এক জনপ্রতিনিধির মায়ের সর্প দংশনের পর দ্রুত হাসপাতালে নেয়ার পরও মৃত্যুর খবর নানা প্রশ্নের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। গতকাল দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে অ্যান্টি¯েœক ভেনম না থাকার খবরসহ সাপে কাটা এক শিশু রোগীর পিতার সাথে এক প্রতারকের প্রতারণার বর্ণনা পত্রস্থ হয়েছে। এসব কি কোনো সভ্য সমাজের চিত্র? গরমের ওষুধ শীতে বরাদ্দ দেয়া হলে তা পড়ে থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় কি সঙ্গত নয়? আমাদের সমাজে অনেক ক্ষেত্রেই সেটাই হয়, হচ্ছে।
গরম আর বর্ষায় সাপের উপদ্রব বাড়ে। শুধু মাঠে কাজ করতে গিয়েই নয়, ঘরে ঘুমিয়েও অনেকে সর্প দংশনের শিকার হয়। বিষধর সাপে দংশন করলেও সুচিকিৎসায় দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠা সম্ভব। চিকিৎসা বিজ্ঞান বিষয়টি বহু আগে নিশ্চিত করলেও তার সুফল আমাদের সমাজের সর্বস্তরে সকলের মাঝে পৌঁছে দেয়া এবং নেয়ার ক্ষেত্রে অবহেলা ও অসচেতনতার ঘেরাটোপ টপকাতে হয়েছে বটে। এরপরও ভ্যাকসিনের অভাবে হয়রানি, মৃত্যু কি মেনে নেয়া যায়?