ওষুধ ভেজাল ও নকলকারীদের দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কাম্য

জীবন রক্ষাকারী ওষুধে ভেজাল। খবরটা নতুন নয়। সম্প্রতি ভেজালের একটি স্পষ্ট চিত্র পাওয়া গেছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে জমা দেয়া বিশেষজ্ঞ কমিটির চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদনে যে তথ্য উঠে এসেছে তা চমকে ওঠার মতোই। বিশেষজ্ঞ তদন্ত কমিটি দেশের ৮৪টি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সরেজমিন পরিদর্শন শেষে এই প্রতিবেদন করেছে। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০টি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল ছাড়াও ১৪টি কোম্পানির সব ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ উৎপাদনের অনুমতি বাতিল এবং ২২টি কোম্পানির পেনিসিলিন ও সেফালোসেপারিন গ্রুপের অ্যান্টিবায়েটিক উৎপাদনের অনুমতি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। অবশ্য পরবর্তীতে কোম্পানিগুলোর লাইসেন্সও বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলেও পত্র-পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হয়েছে। তবে মনে রাখা দরকার, ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ তৈরির জন্য ইতঃপূর্বে শনাক্তকৃত ২৯টি কোম্পানির বিরুদ্ধে গত দুই বছরেও ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। উপরন্তু নতুন করে ওই তালিকায় যুক্ত হয়েছে আরও ২৭টি কোম্পানি। ওষুধ নকল করা কিংবা প্রয়োজনীয় উপাদানে ভেজাল দেয়া মানে নীরবে মানুষ হত্যা করা। যেসব কোম্পানি চিহ্নিত করা হয়েছে, তার মধ্যে কয়েকটি ক্যান্সারের মতো রোগের ওষুধেও ভেজাল দিচ্ছে। এমনকি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দিকনির্দেশনা না মেনেই তৈরি করা হচ্ছে নিম্নমানের অ্যান্টিবায়োটিক। সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন, এ অপরাধমূলক ওষুধ উৎপাদানের ঘটনা বছরের পর বছর চলছে কীভাবে? তবে কি ওষুধ প্রশাসনের অধিদফতরেই বিদ্যমান দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা?

অভিযোগ রয়েছে, ওই প্রশাসনিক দফতরের কেউ কেউ কোনো কোনো ওইসব প্রতিষ্ঠানের পরামর্শক হিসেবে নিয়োজিতও রয়েছেন। এসব অভিযোগেরও তদন্ত হওয়া দরকার। নকল কিংবা ভেজাল ওষুধের প্রতিক্রিয়ায় অনিবার্য হয়ে ওঠে মৃত্যু। এর আগে সেবনকারীর অ্যালার্জি, গ্যাস্ট্রিক, আলসারও হতে পারে। এর পাশাপাশি যে কারণে ওষুধটি সেবন করা হচ্ছে, তার নিরাময় না ঘটিয়ে রোগটি আরো জটিল আকার ধারণ করিয়ে মৃত্যুর দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। ওষুধ জীবন রক্ষার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ, এ খাতে যারা অপরাধ করছেন তাদের দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কাম্য।