এসএসসি পরীক্ষার আগেই সুরাহা হওয়া দরকার

শিক্ষপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে সারাদেশের প্রায় ২৭ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী লাগাতার ধর্মঘট চালিয়ে যাচ্ছেন। অন্যদিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে চলছে আমরণ অনশন কর্মসূচি এবং আন্দোলনকারীরা বলেছেন, দাবি-দাওয়া আদায় না হওয়া পর্যন্ত দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলমান ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে। চলমান নির্বাচনের বছরে বেশ কিছু সেক্টরে দাবি-দাওয়া কেন্দ্রিক আন্দোলন, কখনও বা অনশন ধর্মঘটের মতো চূড়ান্ত কর্মসূচি ঘোষণা করে সেগুলো পালন করা হচ্ছে। এটা যদি নির্বাচনের বছরে সরকারকে চাপে ফেলার জন্য হয়ে থাকে, তাহলে তা অবশ্যই নিন্দনীয়। প্রতিটি পেশারই মানুষের নানারকম পেশাগত সমস্যা থাকতেই পারে; সেগুলো আদায় করার জন্য আন্দোলনও হতে পারে; কিন্তু সাধারণ মানুষের ক্ষতি হতে পারে এমন কোনো কিছুকেই জিম্মি করে আন্দোলন করা সমীচীন নয়। এসএসসি পরীক্ষার আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। এ অবস্থায় অনির্দিষ্টকালের জন্য আন্দোলনের হুমকি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। বেসরকারি যেসব শিক্ষক-কর্মচারী এখনও জাতীয়করণের আওতায় আসেননি, তাদের আর্থিক দুর্দশার বিষয়টি না বোঝার কথা নয়। কিন্তু জাতীয়করণের দাবি পূরণের জন্য আন্দোলনের যে সময়টি তারা বেছে নিয়েছেন, তা গ্রহণযোগ্য নয়। যারা এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছে তাদের ভবিষ্যত জীবনের কথা ভেবে তারা এই সময়কে আন্দোলনের বাইরে রাখবেন। বেসরকারি শিক্ষা জাতীয়করণ লিয়াজো ফোরামের একজন মুখপাত্র বলেছেন, মাদরাসা ও কারিগরি বিভাগের প্রতিমন্ত্রীর সাথে তাদের আলোচনা হয়েছে এবং তিনি জাতীয়করণ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজ চেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর সাথে তাদের আলোচনা হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে এমন নির্দেশনা দেবেন, যা আন্দোলনের শিক্ষক-কর্মচারীদের উত্তেজনা প্রশমনে সহায়ক হবে। প্রেসক্লাবের সামনে ১৩ দিন ধরে যে আমরণ অনশন চলছে, সেখানে ইতোমধ্যে অনেক শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এ ধর্মঘট চলতে থাকলে আরও অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়বেন, সন্দেহ নেই। তাই অবিলম্বে সংকটটির সুরাহা হওয়া প্রয়োজন। ৫ লাখ আন্দোলনকারীর জীবন স্বচ্ছন্দময় হয়ে উঠতে পারে। তারা তো ছাত্র-ছাত্রী পড়াচ্ছেনই। তাদের শ্রম ও মেধার মূল্যায়ন করা রাষ্ট্রের দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে।