একদিকে ঈদের আনন্দ অন্যদিকে বেদনাবিধুর পরিবেশ

 

একদিকে ঈদের আনন্দ, অপরদিকে অসংখ্য দুর্ঘটনার বেদনাবিধুর পরিবেশ। চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুরে পৃথক কয়েকটি দুর্ঘটনা ও খুনের ঘটনা ছাড়া তেমন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। কুষ্টিয়ার দৌলতপুর ও সিরাজগঞ্জে নৌকাডুবিতে কমপক্ষে ২০ শিশু কিশোরের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। তারা ঈদের আনন্দ করতে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। ঝিনাইদহে মোটরসাইসাইকেল দুর্ঘটনায় একজন চিকিৎসক মারা গেছেন। চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরের সড়কগুলোও ছিলো ভয়াবহ ঝুঁকিপূর্ণ। অসংখ্য মোটরসাইকেলের বেপরোয়া চলাচল চমকে দিয়েছে সাধারণ পথচারীদের। ভাগ্যিস মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় রক্তাক্ত হয়নি পিচঢালা কলো পথ। তবে করিমন-নসিমন দুর্ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

জনসংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েই চলেছে। যদিও এ সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট বিভাগ তাদের প্রতিবেদনে সন্তোষজনক বলেই উল্লেখ করে। ঘনবসতির জনপদে সর্বক্ষেত্রে যতোটা শৃঙ্খলা রক্ষা করা দরকার অতোটা দূরাস্ত, মাঝে মাঝে দৃশ্যটা এতোটাই ভয়াবহ হয়ে ওঠে যে, ভাগ্যের ওপরই ছেড়ে দিয়ে দীর্ঘশ্বাস ছাড়া গত্যান্তর থাকে না। বিশেষ করে সড়ক পরিস্থিতি। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে সড়কে যানজট বৃদ্ধি পাওয়াটা অমূলক নয়। আইনের যথাযথ প্রয়োগ থাকলে ভয়াবহ পরিস্থিতি ফুটে ওঠে না। ঈদের আনন্দ করতে গিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে যাদেরকে হেলেদুলে চালাতে দেখা গেছে তাদের সকলেই কি চালক হিসেবে স্বীকৃতি প্রাপ্ত? তা যখন নয়, তখন তাদের হাতে মোটরসাইকেল দেয়া হলো কেন, দেয়া হলেও তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হয় না কেন? এরকম অনেক ‘কেনোর’ জবাব আমাদের সমাজে মেলে না। নৌকাডুবি? নিরাপত্তার ব্যবস্থা ছাড়াই নৌকায় শিশু-কিশোরদের নেয়া হলো কেন? তারও জবাব নেই। আইন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে সর্বক্ষেত্রে সবসময় উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হয় না। শ্যালোইঞ্জিনচালিত অবৈধ যান তারই কুফল। পটকা-আতশবাজি? দেশে এর বৈধতা নেই। এরপরও থেমে থাকেনি, থামে না। পুলিশের নমনীয়তা এটাও ভয়াবহ আকারে ছড়াতে পারে। ছড়ায়।

এটা করা যাবে না, ওটা করা যাবে না বলে শিশু-কিশোরদের সর্বক্ষেত্রে দমিয়ে রাখা তাদের স্বাভাবিক বিকশে আন্তরায়। তাই বলে তাদের যা ইচ্ছে যা খুশি তাই করতে দেয়া কতোটা সমীচীন? মোটরসাইকেল চালানো কতোটা শিখেছে, রাস্তায় সে কীভাবে চালাচ্ছে সেদিকে ক’জন অভিভাবকের নজর থাকে? শিশু-কিশোরদের প্রতি বেখেয়াল হলে চলে না। ঈদ উপলক্ষে অটুকু করতেই পারে বলে নজর এড়ানোর ফাঁকে উৎসবের আকাশে যে কান্নার ছায়া নেমে আসতে পারে তা উপলব্ধি করেই সকল অভিভাবকেরই দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেয়া দরকার। একই সাথে দরকার আইন প্রয়োগকারীদের বাড়তি নজরদারি। যদিও অপ্রতুলতা, তবুও দায়িত্বে অবহেলা মঙ্গল বয়ে আনে না। নৌকডুবি, সড়ক দুর্ঘটনাসহ হত্যাকাণ্ডে যাদের ঈদ আনন্দ মলিন হয়েছে তাদের প্রতি সমবেদনা।