ইউপি নির্বাচনে প্রার্থী সঙ্কট

ইউনিয়ন পরিষদের প্রথম ধাপের ৭৩৮টি ইউনিয়নের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী দিতে পারেনি দেশের অন্যতম বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপি। দলটির অভিযোগ সরকারি দলের বাধার মুখে তাদের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। প্রধান প্রতিপক্ষের এই ব্যর্থতা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে সুবর্ণ সুযোগ করে দিয়েছে। প্রথম ধাপেই ২৫টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হওয়ার দ্বারপ্রান্তে অপেক্ষা করছে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে প্রধান দু রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির একাধিক মনোনয়ন প্রার্থী থাকার কথা। দু প্রধান দল যে ক্ষেত্রে প্রতিটি ইউনিয়নে দলীয় মনোনয়ন দেয়ার সময় কাকে রেখে কাকে প্রার্থী করা হবে সমস্যায় ভুগেছে তখন ৭৩৮টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে ৭১টিতে বিএনপির প্রার্থী না থাকা সত্যিকার অর্থেই রহস্যজনক।

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ২৫টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ছাড়া কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই এটিকেও স্বাভাবিক বলে ভাবা কঠিন। বিএনপি অভিযোগ করেছে সরকারি দলের বাধার মুখে শুধু বাগেরহাটেই ১৯টি ইউনিয়নে তাদের মনোনীত প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেনি। তাদের মতে উপজেলা ও পৌরসভা নির্বাচনের মতো ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও অভিন্ন দৃশ্য বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদ হলো তৃণমূল পর্যায়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থানীয় সরকার। এলাকাবাসীর সঙ্গে এ স্থানীয় সরকারের সম্পর্ক ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এলাকার উন্নয়ন শুধু নয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রেও ইউনিয়ন পরিষদগুলো তাত্পর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

সরকারের সাথে এলাকাবাসীর যোগসূত্র হিসেবেও দায়িত্ব পালন করে তারা। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার প্রতিশ্রুতি দিলেও এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন কতোটা তত্পর তা প্রশ্নাতীত নয়। পৌরসভা নির্বাচনে সরকারি দল সমর্থকদের দৌরাত্ম্য বন্ধে নির্বাচন কমিশন যে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তা তাদের আরও কোণঠাসা অবস্থায় ফেলেছে। সুষ্ঠু নির্বাচন চাইলে নির্বাচন কমিশনকে এ সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে মাথা সোজা করে দাঁড়াতে হবে।