আল বিদা মাহে রমজান

প্রফেসর মুহাম্মদ ইউসুফ আলী: আজ ২৫ রমজান। অশেষ পূণ্যময় বৈশিষ্টের আঁধার মহিমান্বিত মাহে রমজানের নাজাত বা মুক্তির দশকের আর মাত্র কয়েকটি দিন বাকি। এই শেষ দশকে জাহান্নাম থেকে বিপুল সংখ্যক কয়েদীকে নাজাত দেয়া হয়। এক হাদিসে হুজুর (সাঃ) বলেন, রমজানের প্রতি দিবারাতে জাহান্নামের কয়েদীদেরকে মুক্তি দেয়া হয় এবং প্রতি দিবারাতে মুসলমানের একটি দোয়া অবশ্যই কবুল করা হয় (তারগিব)। আর এক হাদিসের অংশ বিশেষে প্রিয় নবী কারিম (সাঃ) এরশাদ করেন, আল্লাহ তায়ালা রমজান মাসে ইফতারের সময় এমন দশ লাখ লোককে জাহান্নাম হতে মুক্তি দান করেন যাদের ওপর জাহান্নাম ওয়াজিব হয়ে গিয়েছিলো। এরপর যখন রমজানের দেশ দিন আসে তখন পয়লা রমজান থেকে শেষ পর্যন্ত যতো লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেয়া হয়েছে তার সমসংখ্যক লোককে একদিনে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেয়া হয় (তারগিব: বায়হাকি)। এ কারণে আমাদেরও বেশি বেশি আল্লাহর কাছে নাজাতের জন্য দোয়া করা উচিত। কারণ জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাওয়া ও জান্নাত হাসিল করাই মানুষের আসল উদ্দেশ্য ও কামিয়াবি। আল্লাহপাক পবিত্র কোরআনে এরশাদ করেছেন: যে জাহান্নাম থেকে মুক্তি পেলো ও জান্নাতে প্রবেশ করলো সেই প্রকৃত সফলতা লাভ করলো (আল-কোরআন)। হাদিসে আরও আছে, রমজানের প্রতিরাতে একজন ঘোষণাকারীকে আল্লাহপাক হুকুম করেন যেন সে তিনবার এই ঘোষণা দেয় যে, আছে কোনো প্রার্থনাকারী? যাকে আমি দান করবো। আছে কোনো তওবাকারী? তার তওবা আমি কবুল করবো। আছে কোনো ক্ষমাপ্রার্থী? যাকে আমি ক্ষমা করবো (তারগিব: বায়হাকি)। নাজাতের দশকের এই শেষ দিনগুলোতে আমাদের ইবাদতকে আরও বাড়িয়ে দেয়া দরকার। কারণ হুজুর (সাঃ) স্বয়ং নিজে রমজানের শেষের দিকে ইবাদতবন্দেগী বাড়িয়ে দিতেন, নিজে রাত জাগতেন এবং পরিবারের লোকজনদেরকেও রাত জেগে ইবাদত করার জোর তাগিদ দিতেন (মুসলিম)। তাছাড়া অধিকাংশ হাদিসের রেওয়ায়েত অনুসারে ওলামায়ে কেরাম বলেছেন মহিমান্বিত কদরের রাত শেষ দশকের যেকোনো রাতে হতে পারে। এক হাদিসে হুজুর (সাঃ) এরশাদ করেন, তোমরা শবেকদর তালাশ করিবে রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাত্রিতে (বুখারি)। তাই অশেষ নেকির এই মাহে রমজানের শেষ দশকে আমাদের আরও বেশি বেশি ইবাদতে মগ্ন হওয়া উচিত।