আলোচনার মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হবে

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কারাদ- হওয়ায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি যাবে কি না তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। রাজনৈতিক মহলের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মধ্যেও এ নিয়ে চলছে জোর আলোচনা। বিএনপির পক্ষ থেকে এখনো বলা হচ্ছে, খালেদা জিয়াকে ছাড়া তারা কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না। অথচ খালেদা জিয়া আগামি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন কি না তা এখনো অনিশ্চিত। এর মধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনারও বলেছেন, তিনি অংশ নিতে পারবেন কি না তা আদালতই নির্ধারণ করবেন। তার আগে পর্যন্ত কিছুই বলা যাবে না। খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা সোমবার রায়ের অনুলিপি হাতে পেয়েছেন। মঙ্গলবার আপিল আবেদন দাখিল করেছেন। এখন উচ্চতর আদালতেই বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।
খালেদা জিয়া তিনবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। সারা দেশে বিএনপির ব্যাপক জনভিত্তি রয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই মানুষ আশা করে বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশ নিক এবং সে নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও অংশপ্রহণমূলক হোক। তাই বিএনপির নির্বাচনে আসা না-আসা নিয়ে জনমনে একধরনের অস্বস্তি কাজ করে। যদিও আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্যে নির্বাচনে বিএনপির আসা না-আসাকে তেমন গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে না বলেই মনে হয়।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি দীর্ঘদিন থেকেই অসহিষ্ণু ও সংঘাতপূর্ণ। ২০১৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো অংশ না নেয়ায় সেই নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা দেশ-বিদেশে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। রাজনৈতিক সংঘাতে বহু মানুষকে জীবন দিতে হয়েছে। সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠেছিলো। সাধারণ মানুষ সেই পরিস্থিতি আবার দেখতে চায় না। সে কারণেই তারা চায়, আগামী নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ থাকুক। এ জন্য বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর সাথে ক্ষমতাসীন দল ও সরকারের দূরত্ব কমিয়ে আনতে হবে। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি বিএনপিকে আইনি প্রক্রিয়ায়ই সম্পন্ন করতে হবে। আর নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়টিকে গণতান্ত্রিক রাজনীতির অংশ হিসেবেই দেখতে হবে। আমাদের একটি শান্তিপূর্ণ, স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনই উপহার দিতে উভয় পক্ষ আন্তরিকভাবে সচেষ্ট হবে।