আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত সমাধান করা হোক

 

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে আবারও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।বান্দরবানেরমিয়ানমার সীমান্তে গত কদিন ধরে যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে তাউদ্বেগের বিষয়। নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি) ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের মধ্যে ঘন ঘনগুলিবিনিময় হচ্ছে। দু বাংলাদেশি নিহত ও চার বাংলাদেশি নিখোঁজ হওয়ারও খবররয়েছে। নিহতদের একজন বিজিবির সদস্য বলে জানা গেছে। গুলিতে নিহত হওয়ার পরতার লাশ বিজিপি সদস্যরা নিয়ে যায়। লাশ ফেরত নেয়ার জন্য বিজিপির প্রস্তাবমতো বিজিবি সদস্যরা গত শুক্রবার নির্ধারিত এলাকায় গেলে বিজিপি গুলিবর্ষণ শুরুকরে। জবাবে বিজিবি পাল্টা গুলি চালালে যুদ্ধাবস্থার সৃষ্টি হয়। বস্তুতমিয়ানমার সীমান্তে বেশ কিছুদিন ধরে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করলেও পরিস্থিতিপ্রকাশ্য রূপ নেয় বুধবার।

সীমান্তবর্তী রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরেবিজিবি সদস্যরা টহল দেয়ার সময় ওইদিন সকালে সীমান্তের ওপার থেকে হঠাতগুলিবর্ষণ শুরু হয়। গোলাগুলির পর ওই এলাকায় বিজিবি পতাকা বৈঠকের প্রস্তাবপাঠালেও তাতে সাড়া দেয়নি মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষীরা।মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর এ আচরণ উস্কানিমূলক। এর পেছনে কী উদ্দেশ্যকাজ করছে তা খতিয়ে দেখা দরকার। বাংলাদেশের গোয়েন্দা সূত্রে বলা হয়েছে,সীমান্তে মিয়ানমার ব্যাপক সেনা সমাবেশও ঘটিয়েছে। এটি বিশেষ ইঙ্গিতপূর্ণ।দেশটির সাথে আমাদের সম্পর্ক উত্তেজনাকর হয়ে ওঠার বেশ কিছু উপাদান সুপ্তঅবস্থায় রয়েছে। এর একটি হলো,দেশটির রাখাইন রাজ্যসহ বাংলাদেশ সীমান্তবর্তীএলাকায় মুসলমান সম্প্রদায়ের প্রতি মিয়ানমার সরকারের আচরণ। তারা এ রাখাইনজনগোষ্ঠীকে বার্মিজ হিসেবে স্বীকার করে না। কিছুদিন পরপরই তাদের ওপর হামলাচালানো হয়, জ্বালিয়ে দেয়া হয় ঘরবাড়ি। সরকারি বাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়েতারা বিভিন্ন সময়ে দলে দলে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে। মিয়ানমারের সামরিকজান্তাও যেন সেটাই চায়। সীমান্তে বিজিপির আচরণ ও সৈন্য সমাবেশ আবারও তেমনকোনো ঘটনার লক্ষণ কি-না,এ ব্যাপারে আমাদের সতর্ক থাকা দরকার। বর্তমানে দুলক্ষাধিক রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে অবস্থান করছে। তাদের ফিরিয়ে নেয়ারকোনো আগ্রহ মিয়ানমার সরকারের মধ্যে দেখা যায় না। আমরা মনে করি,আলোচনা ওদ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবেই এ সমস্যারসমাধান হওয়া উচিত।