আত্মহত্যায় প্ররোচনাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কাম্য

 

টাকা চুরির অভিযোগই শুধু করা হয়নি, মারধরও করা হয়েছে। অপবাদ অপমান সহ্য করতে না পেরে আত্মঘাতী হয়েছে কলেজছাত্রী। এ ঘটনাকে খাটো করে দেখা মানে সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে নিজেকে আড়াল করা। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

জীবন সংগ্রামে চলার পথে জয় থাকে, থাকে পরাজয়। ঘটনা প্রবাহই তো জীবনছবি। ঘটনা প্রবাহের মাঝে কোনো কোনো ঘটনা জীবনটাকেই বিষিয়ে দেয়, জীবন প্রদীপকে নিভিয়ে দেয়াটাই যেন অনিবার্য হয়ে ওঠে। এরপরও কি আত্মহত্যার মধ্যে শুভবুদ্ধির পরিচয় মেলে? না। অবশ্যই আত্মহত্যা কোনো সমাধান নয়। নয় প্রতিশোধও। এটা কাপুরুষচিত কাজ। এরপরও আমাদের সমাজে প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে আত্মহত্যার ঘটনা। সমাজে ছড়াচ্ছে আত্মহত্যা প্রবণতা। প্রতিকার? নূন্যতম উদ্যোগেরও পূর্বাভাস নেই। আছে শুধু গড্ডালিকায় গা ভাসানোর গতানুগতিকতা। এরই আড়ালে ধামাচাপা পড়ছে বহু রোমহর্ষক ঘটনা।

একজন কলেজছাত্রীর বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ উত্থাপন করা হলো। তাকে বেঁধে নির্যাতন করা হলো। বলা হলো, ওর ব্যাগ থেকে চোরাই টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। হায়রে দুনিয়া! কতো রকমেরই তো চক্রান্ত থাকে। প্রথম জনের ব্যাগে বা ঘরে দ্বিতীয় জনের টাকা বা সোনার গয়না কি তৃতীয় কেউ রাখতে পারে না? তা ছাড়া চুরি করলেও কি তাকে ধরে বেঁধে নির্যাতনের সুযোগ দেশের প্রচলিত আইনে আছে? না। তা হলে কেন একজন কলেজছাত্রীকে চুরির অভিযোগে মারধর করা হলো, কেন তাকে অপদস্থ করা হলো? যাদের দেয়া অপবাদে কলেজছাত্রী আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে তাদের কেন দ্রুত গ্রেফতার করা হলো না? কখন অভিযোগ দেয়া হবে, কখন মামলা হবে, তারপর গ্রেফতার করা যায় কি-না ভাববে পুলিশ। এতে কি আইনের প্রতি সাধারণ মানুষের শ্রদ্ধাবোধ বাড়ে?

কোনো প্রকার কালবিলম্ব না করেই আত্মহত্যায় প্ররোচনাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া দরকার। সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে না পারলে এ ধরনের অপরাধ প্রবণতা গোটা সমাজকেই যে গিলে খাবে- তা বলাই বাহুল্য।