অস্ট্রেলিয়া প্রবাসীর মায়ের আকুতি অবশ্যই আমলে নেয়া উচিত

পুলিশ পরিচয়েই শুধু নয়, উর্দি পরেও যে অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায় করা হচ্ছে না তা নয়। এইতো সেদিনও ঢাকায় মুক্তিপণ দাবি করা ডিবি পুলিশের ৬ সদস্যকে চাকরি থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। ওদের বিরুদ্ধে করা হয়েছে মামলা। এছাড়াও নানা অজুহাতে ধরে নিয়ে গারদে রেখে টাকা আদায়ের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এর মাঝে যখন চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গার একজন বৃদ্ধা মা তার অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী ছেলেকে আলমডাঙ্গা থেকে ধরে নিয়ে গাজীপুরের ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ২ লাখ টাকা দাবি এবং তা না পেয়ে ২ হাজার পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার দেখিয়ে মামলা রুজুর অভিযোগ করেছেন, তখন তা আমলে না নেয়াটা কি অন্যায় নয়? অবশ্যই। শুধু মুখে মুখে নয়, যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বিচার বিভাগীয় তদন্ত চাওয়ার অধিকার অবশ্যই দেশের প্রত্যেক নাগরিকের রয়েছে।
গাজীপুর ডিবি পুলিশ গাজীপুরের কালিয়াকৈর থেকে ২ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ ধরেছে বলে মামলায় দাবি করেছে। আর অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী আইটি প্রকৌশলীর মা বলেছেন, তাকে বৃহস্পতিবার আলমডাঙ্গার কালিদাসপুর শাদা ব্রিজের নিকট থেকে মাইক্রোবাসে তুলে নেয়া হয়। গতকাল দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকায় এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জের বরাত দিয়ে যে বক্তব্য উপস্থান করা হয়েছে তাতে স্পষ্ট, গাজীপুর ডিবি পুলিশের একটি দল আলমডাঙ্গায় এসেছিলো। আলমডাঙ্গা থেকে আটকের পর তা গাজীপুরের কালিয়াকৈর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দাবির মধ্যে যেমন সন্দেহের যথেষ্ট কারণ রয়েছে, তেমনই একজন অস্ট্রেলিয়া প্রবাসীই নন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে সেখানে বসবাস করার বদৌলতে স্থায়ী নাগরিকত্বও লাভ করেছেন। অস্ট্রেলিয়া থেকে যে ছেলে তার মায়ের আদর পেতে এসেছে, সেই ছেলের বিরুদ্ধে ইয়াবা পাচারের অভিযোগকে স্থানীয়রা কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছে না। শুধু বৃদ্ধা মায়ের অভিযোগ নয়, স্থানীয়দের মধ্যে এ নিয়ে চরম ক্ষোভেরও সঞ্চার হয়েছে। তাছাড়া ঘটনার আড়ালে ঘটনা থাকে। বিয়ে সাধী নিয়ে পূর্ব বিরোধের সূত্র ধরেও এ চক্রান্ত হওয়া অমূলক নয়।
মাদক সমাজে এতোটাই সহজলভ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, ওর করালগ্রাসে কে কখন পড়ছে, পড়বে তা বলা কঠিন। আগুনের ফুলকির মতো উড়ছে সমাজের মাথার ওপর। কখন কোন পরিবারের চালে পড়ে তছনছ করবে কে জানে? সে হিসেবে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী ওর কবলে পড়তে পারে না তা যেমন বলা কঠিন, তেমনই পুলিশের কোনো সদস্য বা কোনো কর্তা যেকোনো চক্রান্তে প্রভাবিত হয়ে কারো হয়রানি করতে পারেন না তাও বিশ্বাস করা যায় না। তাছাড়া গাজীপুরে পূর্ব বিরোধেরও সূত্র রয়েছে যখন তখন একজন অস্ট্রেলিয়া প্রবাসীর বৃদ্ধা মায়ের আকুতি অবশ্যই ঊর্ধ্বতন কর্তাদের আমলে নেয়া উচিত। সুষ্ঠু স্বচ্ছ তদন্তপূর্বক প্রকৃত দোষী বা দোষীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে পারলে উপকৃত হবে সমাজ। অন্যথায় বাড়বে ক্ষতি। আস্থা বৃদ্ধিতে পুলিশেও দরকার স্বচ্ছ জবাবদিহিতা।