অপরাধী পার পেলে সমাজে অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পায়

শুধু প্রত্যন্ত অঞ্চলে নয়, শহর ও শহরতলীর সর্বত্রই মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরছে নানা পরিচয়ের মোবাইলফোন ছিনতাইকারী। মোটরসাইকেলযোগে দাপিয়ে বেড়ানো এ ছিনতাইকারীদের প্রথম পছন্দ বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী। গতকালও চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের বেগমপুর কলোনির দু শিশু শিক্ষার্থীর নিকট থেকে ডিবি পরিচয়ে মোবাইলফোন ছিনিয়ে সটকেছে দামি মোটরসাইকেলে চেপে দাপিয়ে বেড়ানো দু ছিনতাইকারী। এর আগে ডিঙ্গেদহের খেজুরা, ঘোষবিলার গলাইদড়ি ব্রিজের নিকটসহ বেশ কয়েকটি স্থানে অভিন্ন কৌশলে ছিনতাইয়ের খবর পত্রস্থও হয়।
এক-দুজন স্কুল শিক্ষার্থীকে মোবাইলফোন হাতে নিয়ে হাঁটতে বা টিপাটিপা করতে দেখলেই মোটরসাইকেলযোগে পাশে এসে থামছে ছিনতাইকারী। প্রথমেই নিজেদের ডিবি পুলিশ বা অন্য পরিচয় দিয়ে মোবাইলফোনে অন্যকে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ তুলছে। মোবাইলফোনটি হাতিয়ে নেয়ার আগে প্রশ্ন করছে, তোমাদের মোবাইলফোনে আপত্তিকর ছবি কেন? শিক্ষার্থী তা অস্বীকার করতেই দেখি বলেই মোবইলফোনে ছবি তল্লাশি করার ভান করে হুট করে মোটরসাইকেল হাকিয়ে সটকে পড়ছে। স্কুলশিক্ষার্থীরা প্রথমে ভয়ে মুখ না খুললেও একপর্যায়ে তারা অভিভাবককে জানালেও অভিভাকদের তেমন কেউই মামলা করতে থানা পর্যন্ত যাচ্ছেন না। ফলে ছিনতাইকারীদের চুয়াডাঙ্গার প্রায় সর্বত্রই অপতৎপরতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। অথচ ছিনতাই হওয়া সেলফোন বা মোবাইলফোন উদ্ধার পুলিশের পক্ষে অসম্ভব নয়। কেননা, কখন কোন মোবাইলফোনে কোন অপারেটরের কতো নম্বর সিমটি ব্যবহৃত হচ্ছে তা জানা আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহের দায়িত্বশীল কর্তাদের কাছে খুব একটা কষ্টসাধ্য নয়। তাছাড়া মোবাইলফোন ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনাটি কোনোভাবেই খাটো করে দেখা উচিত নয়।
পুলিশের হাতে মোবাইলফোন শনাক্তের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি রয়েছে। দরকার শুধু আন্তরিকতার সাথে তা উদ্ধারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ। মামলা হলে- দু-একটি মোবাইলফোন উদ্ধারের পাশাপাশি ছিনতাইকারী চক্র শনাক্ত করতে পারলে ওদের অপতৎপরতা হ্রাস পেতে বাধ্য। অন্যথায় ছিনতাইকারীরা আরও ভয়ানক হয়ে উঠবে, আর তার খেসারত দিতে হবে সমাজকে। ফলে ছিনতাইয়ের শিকার শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের যেমন এগিয়ে আসতে হবে, তেমনই পুলিশকেও হতে হবে আন্তরিক।  কারো উদাসীনতায় অপরাধী পার পেলে সমাজে অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।