অপরাধীদের কেউ যেন পার না পায়

 

এটিএম বুথ কার্ড জালিয়াতির হোতাদের চিহ্নিত করতে সমর্থ হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত তছনছ করার ষড়যন্ত্র এঁটেছিলো সুসংবদ্ধ আন্তর্জাতিক জালিয়াতচক্রের সদস্যরা। এ চক্রের সাথে প্রত্যক্ষভাবে চার দেশের চার নাগরিক জড়িত বলেও প্রমাণ পেয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ। জালিয়াত চক্রের দলনেতা জার্মান নাগরিক পিওটর সিজোফেন মাজুরেকের জন্ম ইউক্রেনে। থমাস পিটার ছদ্মনামে তিনি পোল্যান্ডের পাসপোর্টও নিয়েছেন। রোমানিয়া, বুলগেরিয়া, ইউক্রেন ও পোল্যান্ড এই চার পূর্ব ইউরোপীয় দেশে সক্রিয় রয়েছে জালিয়াত চক্রের সদস্যরা। বাংলাদেশসহ এশিয়া-আফ্রিকার কিছু দেশেও তারা থাবা বিস্তারে সামর্থ্য দেখিয়েছে। জালিয়াত চক্রের দল নেতা পিওটর এক বছর আগে বিজনেস ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে আসেন।

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক ব্রিটিশ নাগরিক বুলগেরিয়া ও ইউক্রেনের নাগরিককে নিয়ে বাংলাদেশে এটিএম বুথ ও ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতির ফন্দি আঁটে। বাংলাদেশে তত্পরতা চালানোর জন্য জালিয়াত দলপতি পিওটর বাংলাদেশি এক মেয়েকে বিয়েও করে। স্কিমিং ডিভাইস দিয়ে এটিএম কার্ড ক্লোন করে অন্যের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা আত্মসাৎ শুধু নয়, ভয়াবহ ধরনের জালিয়াতিরও প্রস্তুতি নিচ্ছিলো তারা। একাধিক বেসরকারি ব্যাংকে এটিএম মেশিন সরবরাহের কাজ পাওয়ার ফন্দি এঁটেছিলো জালিয়াত দলের সদস্যরা। এ জন্য কম দামে এটিএম মেশিন সরবরাহের প্রস্তাবও দিয়েছিলো তারা। সিটি ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তাকে তারা তাদের পক্ষে আনতে সমর্থ হয়। এসব অসৎ কর্মকর্তা জালিয়াত চক্রকে পস মেশিন সরবরাহ করতেন। ক্লোনকৃত এটিএম এবং ক্রেডিট কার্ড ওই পস মেশিনে পাঞ্চ করেই তারা দেশি ও বিদেশি ব্যাংক থেকে টাকা হাতিয়ে নিতো।

প্রতারকচক্রের প্রধান পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন মার্চেন্ট পার্টি, ব্যাংক কর্মকর্তা ও বিদেশে অবস্থানরত গডফাদারদের ভাগ দিয়ে তিনি পেতেন ২০ শতাংশ অর্থ। এটিএম এবং ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতিতে সিটি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের জড়িত থাকার ঘটনা একটি পিলে চমকানো খবর বৈকি! আমরা আশা করবো জালিয়াতচক্রের সাথে জড়িতদের সবাইকে পাকড়াও করা হবে। বিদেশে অবস্থানরত জালিয়াতদের ইন্টারপোলের মাধ্যমে ধরে এনে বিচারের সম্মুখিন করা হবে।