৩০ বছরের ইমিগ্রেশন ভবন নির্মাণ করতে পারেনি পুলিশ কর্তৃপক্ষ

দর্শনা অফিস: ফি বছর সরকার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করলেও আজ অবধি ইমিগ্রেশনের নিজস্ব ভবন নির্মাণ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। কাস্টমসের ছোট একটি পরিত্যক্ত কক্ষে ঠাসাঠাসি করে চলছে ইমিগ্রেশনের কার্যক্রম। প্রায় ৩০ বছর আগে ইমিগ্রেশন ভবন নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে জমি অধিগ্রহণ করা হলেও সে জমিতে আজ পর্যন্ত ভবন নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। যে কারণে একদিকে যেমন বিঘ্নিত হচ্ছে যাত্রীসেবা। অন্যদিকে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের পোহাতে হচ্ছে চরম দূর্ভোগ।
জানা গেছে, ১৮৬৮ বৃট্রিস শাসনামলে সালে ততকালীন পাক-ভারত উপমহাদেশের মধ্যে যাত্রীবাহী রেলপথ চালু হয়। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভক্তির পর এ রুট দিয়ে দু দেশের মধ্যে যাত্রী চলাচলা ব্যবস্থা শুরু করে। ১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত পাসপোর্টধারী সাধারণের যাতায়াত সুবিধার জন্য কাস্টমস-ইমিগ্রেশনের কার্যক্রম পরিচালনা করা হতো বর্তমানে দর্শনা আন্তর্জাতিক রেলস্টেশনের একটি কক্ষে। ১৯৮৭ সালেই ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষ একই সাথে জমি অধিগ্রহণ করে জয়নগরে। ওই বছরের ২৯ মে কাস্টমস ভবনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন খুলনা শুল্ক ও আবগারি কালেক্টর একেএম ফজলুল হক। একই সাথে জমি অধিগ্রহণ করা হলেও কাস্টমস কর্তৃপক্ষ প্রায় ৩০ বছর ধরে নিজস্ব ভবনে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। অথচ ৪০ শতক জমি অধিগ্রহণ করে ৩০ বছরেও ভবন নির্মাণ করতে পারেনি ইমিগ্রেশন পুলিশ কর্তৃপক্ষ। কাস্টমস ভবনের এককোনে পরিত্যক্ত ছোট একটি কক্ষে এক প্রকার ঠাসাঠাসি করেই সে থেকে ইমিগ্রেশনের কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। সুত্র বলেছে, দর্শনা চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনে ১ জন এসআই, ১ জন এএসআই সহ ১৩ জন পুলিশ সদস্য এবং ১ জন ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী সকাল ৭ থেকে সন্ধা ৭টা পর্যন্ত কর্মরত থাকে। অথচ তাদের নেই কোনো নিজস্ব ভবন। ফলে প্রতিদিন কোনোভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে ইমিগ্রেশনের কার্যক্রম। নিজস্ব কোনো ভবন না থাকায় এক রকমের অরক্ষিতভাবেই রাখতে হচ্ছে ইমিগ্রেশনের ল্যাবটপ, কম্পিউটার, মূল্যবান মালামাল ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। অন্যের ভবনে নিজেদের কার্যক্রম চালানোর কারণেই যাত্রীসেবা দিতে ব্যর্থ হতে হচ্ছে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষকে। সেই সাথে ইমিগ্রেশনের প্রায় ১৪ জন সদস্যের জন্য নেই থাকার ব্যবস্থা। ছোট কক্ষে অফিসের কাজ করলেও কাস্টমস ভবনের বারান্দায় বসেও এ কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। প্রতিদিন এ রুটে প্রায় ৫শ জন যাত্রী বৈধভাবে বাংলাদেশ-ভারত যাতায়াত করছে। এর ফলে সরকার প্রতি বছর ইমিগ্রেশন থেকে রাজস্ব আদায় করে থাকে প্রায় ৩ কোটি টাকা। বাংলাদেশ-ভারত যাতায়াতকারী যাত্রী সাধারণ অভিমত ব্যক্ত করে বলেছে, যাত্রীসেবা সুবিধার্থে বাংলাদেশ পুলিশ বিভাগ থেকে ইমিগ্রেশন ভবন নির্মাণ করা জরুরি। দু দেশে বৈধ উপায়ে যাতায়াতের জন্য প্রবেশদ্বার হচ্ছে চেকপোস্ট। অথচ সেখানেই চোখে পড়ে দৈন্যতা। যাত্রীসেবা থেকে বঞ্চিত বিদেশি যাত্রীদের কাছে ক্ষুন্ন হচ্ছে দেশের ভাবমূর্তি। বহির্বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি রক্ষায় দ্রুত ইমিগ্রেশন ভবন নির্মাণের দাবি এখন সর্বস্তরের মানুষের।