৩০ জানুয়ারির মধ্যে দাবি মানা না হলে এসএসসি পরীক্ষা বর্জন

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় অষ্টম জাতীয় পে-স্কেলে শর্তহীনভাবে অন্তর্ভুক্তি ও চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছেন বেসরকারি স্কুল-কলেজ ও মাদরাসার (এমপিও এবং নন এমপিও) শিক্ষক-কর্মচারীরা। শিক্ষক নেতৃবৃন্দ বলেছেন, আগামী ৩০ জানুয়ারির মধ্যে তাদের ন্যায্য দাবি মানা না হলে তারা ১ ফেব্রুয়ারি থেকে অনুষ্ঠেয় এসএসসি পরীক্ষা বর্জন করবেন। গতকাল সোমবার বেলা ১১টার দিকে শহীদ হাসান চত্বরের মুক্তমঞ্চে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সভাপতি ফজলুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের প্রধান সমন্বয়কারী শেখ সেলিম। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সিনিয়র সহসভাপতি আলাউদ্দিন, সহসভাপতি শাহিনুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক রাশিদুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার অধিকারী, বাংলাদেশ লাইব্রেরী অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. রিপন, নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক ওসমান গণি প্রমুখ। বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক খাইরুল ইসলামের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সহসভাপতি মাখালডাঙ্গা দীননাথপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাবুত আলী, কোষাধ্যক্ষ মজিবুল হক, সদর উপজেলা শাখার সভাপতি নূর মোহাম্মদ, জীবননগর শিক্ষক সমিতির সভাপতি আকরাম হোসেন প্রমুখ। সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাশিদুল ইসলাম।
প্রধান অতিথি শেখ সেলিম বলেন, শিক্ষকদের মানুষ তৈরির কারিগর বলা হয়। অথচ সরকার শিক্ষকদের সাথে অমানবিক আচরণ করছে। যেখানে সরকারি স্কুলের শিক্ষকরা ইতোমধ্যে অষ্টম বেতন স্কেলের সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেন সেখানে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বঞ্চিত হচ্ছেন। এটা কোনোভাবে কাম্য হতে পারে না। চুয়াডাঙ্গাসহ সারাদেশের বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার (এমপিও এবং নন এমপিও) শিক্ষক কর্মচারীবৃন্দ দীর্ঘদিন যাবত অষ্টম জাতীয় পে-স্কেলে অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। বর্তমান সরকার ইতোমধ্যে অষ্টম জাতীয় বেতন স্কেলে জুলাই ২০১৫ থেকে বকেয়াসহ সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দের বিধি মোতাবেক বেতন ভাতা পরিশোধ করেছেন। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদরাসায় কর্মরত প্রায় ৬ লাখ ২৫ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী সরকার ঘোষিত অষ্টম জাতীয় পে-স্কেলে প্রদত্ত সুযোগ সুবিধা হতে এখনও বঞ্চিত রয়েছেন। স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার (এমপিও এবং নন এমপিও) শিক্ষক কর্মচারীবৃন্দ আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে সরকার ঘোষিত অষ্টম জাতীয় পে-স্কেলে শর্তহীনভাবে অন্তর্ভুক্তি, নন এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এমপিওকরণ ও চাকরি জাতীয়করণের দাবি করছে। সরকার এ দাবি পূরণে ব্যর্থ হলে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীবৃন্দ স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা বন্ধসহ বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবেন। অবিলম্বে এ দাবি মানা না হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তালা ঝোলানোসহ কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেয়া হয়।
সমাবেশ শেষে দাবি আদায়ের লক্ষ্যে শহীদ হাসান চত্বরে মানববন্ধন করেন শিক্ষক কর্মচারীরবৃন্দ। পরে তারা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যান এবং জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ করেন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আনজুমান আরা জেলা প্রশাসকের পক্ষে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন।