১৮ হাজার বাংলাদেশির হজযাত্রায় জটিলতা

 

স্টাফ রিপোর্টার: সৌদি আরব সরকার হঠাত্ করে মোয়াল্লেম ফি বৃদ্ধি করার কারণে চলতি বছর ১৮ হাজার বাংলাদেশির হজযাত্রা নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশের ৯১টি হজ এজেন্ট ‘ডি গ্রেডের’ হজ প্যাকেজে এই ১৮ হাজার মানুষকে হজ করতে নেয়ার জন্য চুক্তিবদ্ধ। হজ এজেন্সির মালিকরা বলছেন, হজ প্যাকেজের আওতায় ডি গ্রেডের মোয়াল্লেম ফি ৫২০ রিয়াল ধার্য ছিল। নির্ধারিত ফিতে হাজিদের সেবা দিতে প্রস্তুতি নিয়ে হজগমনেচ্ছুদের নিকট থেকে এই নির্ধারিত টাকা নেন তারা। কিন্তু পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই সৌদি সরকার এখন ডি গ্রেডের মোয়াল্লেম ফি ২শ রিয়াল বাড়িয়ে ৭২০ রিয়াল নির্ধারণ করেছে। ওই অতিরিক্ত অর্থ হজগমনেচ্ছুরা এখন দিতে চাচ্ছেন না। এ নিয়ে এজেন্টদের সাথে হজগমনেচ্ছুদের বিতণ্ডা, হতাহাতি পর্যায়ে পৌঁছাচ্ছে। প্রতিটি হজযাত্রীর কাছ থেকে ১০ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করছে হজ এজেন্টরা। অতিরিক্ত টাকা না দিলে হজে নেয়া হবে না বলে হুমকি দিচ্ছে হজ এজেন্ট এবং তাদের দালালরা।

তবে হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) মহাসচিব শাহাদাত হোসেন তসলিম বলেন, জটিলতা নিরসনে চেষ্টা চলছে। সৌদি আরবের মোয়াল্লেমদের সাথে বাংলাদেশের হজ এজেন্টরা সমঝোতার চেষ্টা করছেন। কেউ কেউ আপসরফায় এসেছেন। সৌদি আরব কর্তৃপক্ষের কাছেও আবেদন করা হয়েছে। তারা অতিরিক্ত ২শ রিয়াল এ বছরের জন্য মওকুফ করে দিতে পারে। তিনি বলেন, এই অতিরিক্ত মোয়াল্লেম ফি হজযাত্রীদের কাছ থেকে না নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমরা হজযাত্রীদের ওপর বাড়তি অর্থের বোঝা চাপাতে চাই না। কারোর কাছ থেকে অতিরিক্ত এক টাকাও নিতে পারবেন না এজেন্টরা। কোনো হজযাত্রীর কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নিলে আমরা সেই এজেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো।

এদিকে গত বুধবার রাতে সৌদি আরবের মক্কায় বাংলাদেশ হজ মিশনে ৯১টি হজ এজেন্সির মালিক ও প্রতিনিধিরা এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত ২০০ রিয়াল মোয়াল্লেম ফি দিয়ে হজযাত্রী আনা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন। তারা অভিযোগ করেন যে মোয়াল্লেম ফি বাড়ানোর বিষয়ে বাংলাদেশ হজ মিশন ও হজ কাউন্সিল অফিস তাদের আগে থেকে জানায়নি। এই সমস্যার সমাধান না হলে ১৮ হাজার বাংলাদেশির হজ করা অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। এ ব্যাপারে এজেন্সিগুলোর মালিকরা হজ ট্রেডিংয়ের চেয়ারম্যান রাশেদ বদর ও সচিব ওমর আকবরের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেও কোনো লাভ হয়নি বলে জানানো হয়। হজ এজেন্সির মালিক ও প্রতিনিধিরা এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

ভিসা জটিলতা: ই-ভিসা সংক্রান্ত জটিলতায় এবারও ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে হজ যাত্রীদের। নির্দিষ্ট সময়ে অনেকেই হজে যেতে পারছেন না। দেখা গেছে, একই পরিবারের স্বামী ও স্ত্রী আবেদন করলেও এ সমস্যার কারণে একজনের ভিসা দিয়েছে, অন্যজনের পাসপোর্টে ভিসা না দিয়ে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। ই-ভিসা জটিলতার কারণে কনফার্ম থাকার পরও যাত্রীরা বিমানে উঠতে পারছেন না। যাত্রীদের হজক্যাম্প থেকে বিমানবন্দরে নিয়ে যাওয়ার পর ভিসা বুঝিয়ে দিতে না পেরে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। এদিকে অভিযোগ পাওয়া গেছে, বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজ যাত্রীদের অনেকেরই পাসপোর্টে মোয়াল্লেম নম্বর ও বাড়ির ঠিকানা সংবলিত স্টিকার সংযুক্ত না থাকায় ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষার প্রহর গুণতে হচ্ছে।