১৪ জঙ্গির লাশ নিয়ে বিপাকে ঢাকা মেডিকেল মরচুয়ারিতে লাশ রাখা হয়েছে গাদাগাদি করে

 

স্টাফ রিপোর্টার: জঙ্গি বিরোধী অভিযানে নিহত ২০ জনের লাশ নিয়ে নানান জটিলাতার সৃষ্টি হয়েছে। নিহতদের মধ্যে এক জঙ্গির পরিচয় এখনো মেলেনি। অন্যদের পরিচয় মিললেও পুলিশ বলছে, পরিবারের পক্ষ থেকে লাশ নিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করায় তারাও বিপাকে পড়েছে। এই মুহূর্তে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মরচুয়ারিতে নিহত ১৬ জঙ্গি লাশ রাখা আছে। মরচুয়ারিতে লাশ রাখার কোনো খালি জায়গা নেই। মরচুয়ারির লাশের কয়েকটি কেবিনে দুটি করে লাশ রাখা হয়েছে। এ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ ফরেনসিক বিভাগ এই লাশগুলোর সংরক্ষণ প্রক্রিয়া নিয়ে চিন্তিত।

ফরেনসিক বিভাগ সূত্র জানায়, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে মরচুয়ারিতে লাশ রাখার ১৮টি কেবিন রয়েছে। প্রতিটি কেবিনে একটি করে লাশ সংরক্ষণ করার নিয়ম থাকলেও তাদের কোনো উপায় নেই। ৮ টি কেবিনে ১৪ জঙ্গির লাশ সংরক্ষণ করা হচ্ছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম শাখার হিসাব অনুযায়ী গত দুই মাসে গুলশানের হলি আর্টিজান, কল্যাণপুর, নারায়ণগঞ্জ, রূপনগর ও অজিমপুরে পৃথক জঙ্গি বিরোধী অভিযানে গোয়েন্দা পুলিশের অভিযানে ২০ জন নিহত হয়। এদের মধ্যে হলি আর্টিজানে নিহত ৫ জঙ্গি ও সন্দেহভাজন একজনের লাশ সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল মর্গের মরচুয়ারিতে রাখা হয়েছে।

সূত্র জানায়, আদালতের নির্দেশে নিহত জঙ্গিদের ডিএনএ নমুনা যুক্তরাষ্ট্রের এফবিআইয়ের পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, ডিএনএ নমুনার পরীক্ষার রিপোর্ট মামলার তদন্তের সাথে যুক্ত করা হবে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের একজন চিকিত্সক জানান, মরচুয়ারিতে লাশ সংরক্ষণের ফ্রিজের ২০টি কেবিনের মধ্যে আটটি নষ্ট। বর্তমানে ১২টি কেবিনে ১২টি লাশ থাকার কথা থাকলেও সেখানে রাখতে হচ্ছে ১৮টি। এর মধ্যে ১৪ জঙ্গির লাশ রয়েছে। এ অবস্থায় ফরেনসিক বিভাগ লাশগুলো সরিয়ে নিতে পুলিশকে অনুরোধ করে। গত ১ সেপ্টেম্বর ফরেনসিক বিভাগ ঢাকা মেডিকেল অধ্যক্ষের মাধ্যমে পুলিশকে একটি চিঠি দেয়। এ বিষয়ে অধ্যক্ষ ডা. মো. ইসমাইল খান বলেন, ফরেনসিক বিভাগের অধীনে রয়েছে মর্গ। রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে এখানে পোস্টমর্টেম করা হয়। আগের তুলনায় মর্গে ফ্রিজের সংখ্যা  বেড়েছে। এখন ২০টি মরদেহ রাখতে পারি। কিন্তু কিছু দিন যাবত্ ৮টি ফ্রিজ বিকল। মাত্র ১২টি দিয়ে কাজ চলছে। সমপ্রতি অভিযানে নিহত ১৪ জঙ্গির লাশই মর্গের ফ্রিজে আছে।  এছাড়া প্রতিনিয়তই কিছু লাশ আসছে। সেই লাশগুলো রাখতে সমস্যা হচ্ছে।

সূত্র জানায়, মর্গের নিয়ম অনুযায়ী কোন লাশের কেউ দাবিদার না থাকলে, দুই দিন মরচুয়ারিতে সংরক্ষণ করা হয়। এরপর পুলিশ লাশের ছবি তুলে রাখে। দুই দিন পর আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলাম বেওয়ারিশ হিসাবে লাশ দাফন করে দেয়। যেসব লাশের একাধিক দাবিদার অথবা আদালতের কোন নির্দেশনা রয়েছে, সেসব লাশই মরচুয়ারিতে সংরক্ষণ করা হয়। এদিকে, আজিমপুরে জঙ্গি বিরোধী অভিযানে আহত তিন নারী শারমীন, খাদিজা ও শায়লার চিকিত্সা চলছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।