হিমালয়ের ইয়েতি রহস্য উন্মোচন

মাথাভাঙ্গা মনিটর: হিমালয়কে ঘিরে রহস্যগুলোর অন্যতম একটির ইতি ঘটলো। রহস্যঘেরা তুষারমানব (স্নোম্যান) ইয়েতির অস্তিত্ব উদ্ধার করেছেন বিজ্ঞানীরা। জেনেটিক পরীক্ষা চালিয়ে হিমালয়ে বিরল এ প্রাণীর উপস্থিতি শনাক্ত করতে পেরেছেন তারা। তবে তাদের পরীক্ষায় বেরিয়ে এসেছে, প্রাচীন মেরু ভালুক বা পোলার বিয়ার (আকর্টিক সাগরে ঘেরা আকর্টিক সার্কেলে বাসকরা মাংসাশী ভালুক) ও বাদামি ভালুকের যৌথ মিলবন্ধন রয়েছে এ প্রাণীর মধ্যে। ইয়েতির সংগৃহীত চুলের নমুনা পরীক্ষা করে দেখা গেছে, বংশগতভাবে (জেনেটিক্যালি) ১ লাখ ২০ বছর আগের প্রাচীন পোলার ভালুক সঙ্গে সাদৃশ্য পাওয়া গেছে।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যান জেনেটিক্সের অধ্যাপক ব্রিয়ান সিকেস এ গবেষণা চালিয়েছেন। বছরের পর বছর ধরে পর্যাপ্ত পরিমাণে ইয়েতির শারীরিক প্রমাণ সংগ্রহ করেছেন। হিমালয়ের গায়ে রহস্যময় বিগফুটের বৈজ্ঞানিক ব্যাখা দেয়ার জন্য এগুলোর অত্যাধুনিক ডিএনএ টেস্টেও করা হয়েছে। এ অধ্যাপক বলেছেন, এটি খুবই কৌতুহলপূর্ণ ও পুরোপুরি অপ্রত্যাশিত ফলাফল। তবে ড. সিকেস বলেছেন, প্রাচীন পোলার ভালুকের উপস্থিতির বিষয়টি জানা গেলেও তারা এখনও হিমালয়ে ঘুরছে কি-না তা বোঝা যায় না। তিনি বলেছেন, কিন্তু এটি হতে পারে যে, উপপ্রজাতির বাদামি ভালুক হিমালয়ের ওপরে থাকতে পারে। বাদামি ভালুক হয়তো এসেছে পূর্বপুরুষ মেরু ভালুক থেকে। অথবা এও হতে পারে, বাদামি ভালুক ও প্রাচীন মেরু ভালুকের বংশধরদের মেলামেশায় সংকরজাতের হতে পারে এ উপ-প্রজাতির ভালুক। শ শ বছর ধরে হিমালয়বাসীদের মুখে মুখে চাউর হয়ে আসছে ভয়ানক প্রাণী ইয়েতির নাম। কিংবদন্তি পর্বতারোহী রেইনহোল্ড মেসনারসহ কয়েকজন বিশ্ববিখ্যাত পর্বতারোহীও বড় বড় চুলের বানর জাতীয় এ প্রাণীর মুখোমুখি হয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন। তাদের দাবি, ভাগ্যের জোরে ইয়েতির মুখ থেকে বেঁচেছেন তারা। রেইনহোল্ড মেসনার প্রথম ব্যক্তি হিসেবে অক্সিজেন ছাড়াই এভারেস্ট জয় করেন। ধোরাছোঁয়ার বাইরে থাকা এই প্রাণী নিয়ে অনেক কল্পকথা তৈরি করেছেন হিমালয়বাসীরা। এ প্রাণী ক্যামেরা ফ্রেমেও ধরা দেয়নি। অধ্যাপক সিকেস হিমালয়ে দেখতে পাওয়া কয়েকটি প্রাণীর চুলের নমুনা সংগ্রহ করেছেন এবং সেগুলো পরীক্ষা করেছেন। হিমালয়ের উঁচু অঞ্চলের গ্রামের স্থানীয়দের কাছে ইয়েতি নামে পরিচিত দুটি প্রাচীন প্রাণীর চুলের নমুনা পরীক্ষা করেছেন।