হাইকোর্টের রুল : ইসি গঠনে আইন নয় কেন

স্টাফ রিপোর্টার: নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদ অনুসারে আইন প্রণয়নে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না- সরকারের কাছে তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি করে বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল সোমবার এই রুল জারি করেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আইন সচিব ও নির্বাচন কমিশনকে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ ১১ জানুয়ারি এই রিট আবেদন করেন। গতকাল তিনি নিজেই আবেদনের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ?্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু। ইউনুছ আলী বলেন, সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদে নির্বাচন কমিশন গঠন ও দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সংবিধান ও আইনের অধীনে পরিচালিত হওয়ার কথা বলা থাকলেও এখন পর্যন্ত আইন প্রণয়ন করা হয়নি। একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান সংবিধানের বিধানের বাইরে চলতে পারে না। সংবিধানের ১১৮ (১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অনধিক চারজন নির্বাচন কমিশনারকে নিয়ে একটি নির্বাচন কমিশন থাকবে এবং এ বিষয়ে প্রণীত কোনো আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারকে নিয়োগ দেবেন। ১১৮ (৪) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে স্বাধীন থাকিবেন এবং কেবল এই সংবিধান ও আইনের অধীন হবেন। ১১৮ (৫) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘সংসদ কর্তৃক প্রণীত যে কোনো আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে নির্বাচন কমিশনারদের কাজের শর্ত রাষ্ট্রপতি আদেশের মাধ?্যমে নির্ধারণ করে দেবেন। তবে শর্ত হলো, সুপ্রিম কোর্টের একজন বিচারককে যে পদ্ধতি ও কারণে অপসারণ করা যায়, তেমন পদ্ধতি ও কারণ ছাড়া কোনো নির্বাচন কমিশনারকে অপসারণ করা যাবে না। কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশন আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে বিদায় নিচ্ছে। সংবিধান অনুযায়ী ইসি গঠনের আইন প্রণীত না হওয়ায় গতবারের মতো এবারো রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে নতুন কমিশন গঠনের জন্য সার্চ কমিটি করে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত ছয় সদস্যের এই সার্চ কমিটি ইতিমধ্যে সংলাপে অংশ নেয়া ৩১টি দলের কাছে পাঁচটি করে নাম চেয়েছে। সেসব নাম থেকে যাচাই-বাছাই করে সার্চ কমিটি ১০ কার্যদিবসের মধ্যে নতুন নির্বাচন কমিশনের জন্য তাদের সুপারিশ রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দেবে। সেখান থেকেই অনধিক পাঁচ সদস্যের ইসি নিয়োগ দেবেন রাষ্ট্রপতি। এই সার্চ কমিটি গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করেও শনিবার একটি সম্পূরক আবেদন করেছেন আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ। তবে গতকাল এ আবেদনের ওপর শুনানি হয়নি। ইউনুছ আলীর যুক্তি, নির্বাচন কমিশন গঠনের আইন চেয়ে তার রিট আবেদন এখনো বিচারাধীন হওয়ায় এ অবস্থায় সার্চ কমিটি গঠন অবৈধ।