হরিণাকুণ্ডুতে ২৩০ জন মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে ২৬ জন ভুয়া

 

স্টাফ রিপোর্টার: ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় চিহ্নিত রাজাকারদের নাম উঠে এসেছে। নিয়মিত ভাতাসহ সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন তারা। গেজেট মোতাবেক হরিণাকুণ্ডু উপজেলায় ২৩০ জন মুক্তিযোদ্ধার নাম তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৬ জন ভুয়া বা অমুক্তিযোদ্ধা। এদের মধ্যে আবার চিহ্নিত রাজাকার ও পিস কমিটির সদস্য রয়েছেন তিনজন। এরা হলেন উপজেলার বাকচুয়া গ্রামের জামাল হোসেন, ভাতুড়িয়া গ্রামের ডা. রইচ উদ্দিন ও পারফলসী গ্রামের সামছুল হক।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এ উপজেলায় ২৩০ জন মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবার মাসিক সম্মানী ভাতা পেয়ে থাকেন। মাসিক ৫ হাজার টাকা করে সম্মানী গ্রহণ করে থাকেন তারা। ২৩০ জনের মধ্যে ২৭ জন মুক্তিযোদ্ধার বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান, মৃত্যুবরণের কারণে এবং ওয়ারেশ না থাকায় ভাতা বঞ্চিত রয়েছেন। আবার ৭৩ জন মুক্তিযোদ্ধার নাম মুক্তি বার্তায় নেই। ডা. রইচ উদ্দীন স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পিস কমিটির সদস্য হিসেবে রাজাকারদের সহায়তা করেছেন বলে জানান প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা। সেই রাজাকার অর্থের বিনিময়ে মুক্তিযোদ্ধা হয়ে নিয়মিত ভাতা তুলে যাচ্ছেন।

প্রকাশিত গেজেট সূত্রে জানা গেছে, ২৬ জন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে উপজেলার কাপাশহাটিয়া গ্রামের ইবাদত হোসেন, ওসমান খাঁ, আজগর আলী, জোড়াদহ গ্রামের লিয়াকত আলী, জিয়াউদ্দীন, হরিশপুর গ্রামের আব্দুল লতিফ, ইজাল উদ্দীন, পোলতাডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল হাকিম মোল্লা, রঘুনাথপুরের আবু মুসা, অ্যাড. মফিজুর রহমান কাকু, কালাপাহাড়িয়া গ্রামের মুনিব আলী, কেষ্টপুরের ইসাহক আলী, সোনাতনপুর গ্রামের সাবেক চেয়ারম্যান আবুবকর সিদ্দিক, নতিডাঙ্গা গ্রামের আনসার আলী, ভাতুড়িয়া গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেন, মুসা ফকির, বাসুদেবপুর গ্রামের আফজাল হোসেন, গাড়াবাড়িয়া গ্রামের গহর আলী, নারায়ণকান্দি গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমান, বাকচুয়া গ্রামের জামার হোসেন। জামাল হোসেন দুজন মুক্তিযোদ্ধাকে নৃশংসভাবে হত্যা করেন। বিগত ৬ বছরে উপজেলায় ৫ জন মুক্তিযোদ্ধার নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অমুক্তিযোদ্ধা ও ভুয়াদের নাম তালিকা থেকে বাদ দিয়ে উত্তোলন করা মাসিক ভাতার টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত নেয়ার দাবি জানিয়েছেন হরিণাকুণ্ডু উপজেলার প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাগণ। হরিণাকুণ্ডু উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মহিউদ্দীন মাস্টার জানান, যে সব মুক্তিযোদ্ধা ভুয়া, রাজাকার তাদের ভাতা অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত। স্বাধীনতা বিরোধীদের ভাতা বন্ধ এবং সরকারি সমস্ত সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে তিনি সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাছে জোর দাবি জানান।