স্ত্রীর অধিকার আদায়ে মামলা করায় গাংনীর সাহারবাটির সেই মর্জিনাকে মারধর : মামলা তুলে নিতে হুমকি  

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী উপজেলার সাহারবাটি গ্রামের স্বামী পরিত্যক্তা মর্জিনা খাতুনকে বেধড়ক মারপিঠ করা হয়েছে। প্রেমিক জামিরুল ইসলামের নামে মামলা করায় বেজায় চটেছেন আসামি পক্ষ। মামলা তুলে না নেয়ার পরিণতি স্বরুপ শুক্রবার রাতে নিজ বাড়িতে তাকে পিটিয়ে আহত করেছে প্রেমিকের ভাই আক্তারুল ইসলাম। আহত মর্জিনা খাতুন (৩০) গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন। মর্জিনা খাতুন সাহারবাটি গ্রামে দিনমজুর মজিত শেখের মেয়ে।

মর্জিনা খাতুন ও তার পারিবারিকসূত্রে জানা গেছে, মর্জিনার দীর্ঘ পনের বছর দাম্পত্য জীবনে ৩ কন্যা সন্তানের জননী। বিয়ের আগে থেকেই নিজ গ্রামের মৃত আব্দুল গণির ছেলে জামিরুল ইসলামের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। দুজনের সংসার হলেও সম্পর্ক ছিন্ন হয়নি। সম্প্রতি জামিরুলের বিয়ের প্রলোভনে স্বামীর সংসার ছেড়ে পিতার বাড়িতে চলে আসে। জামিরুলের সাথে দৈহিক মেলামেশায় তিনি গর্ভবতী হয়ে পড়েন। বিয়ের স্বার্থে জামিরুলের প্রতিশ্রুতিতে গেল ১৬ মে মেহেরপুরের একটি বাড়িতে গর্ভপাত ঘটানো হয়। এর পরেই সটকে পড়ে জামিরুল। নিরুপায় মর্জিনা খাতুন অসুস্থ্য অবস্থায় গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। কয়েকদিন চিকিৎসায় সুস্থ্য হয়ে মেহেরপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন। প্রেমিক জামিরুল ইসলাম ও তার স্ত্রীকে আসামি করা হয়েছে। ফুঁসলিয়ে ও জোরপূর্বক ধর্ষণ এবং গর্ভপাতের বিষয়ে সুবিচার চেয়েছেন মর্জিনা খাতুন।

এদিকে মামলার বিষয়টি টের পেয়ে মর্জিনার ওপর ক্ষিপ্ত হয় জামিরুল ও তার পরিবার। এর জের ধরে শুক্রবার রাতে মর্জিনার বাড়িতে গিয়ে মামলা তুলে নিতে হুমকি দেন সাহারবাটি গ্রামের মৃত হিসাব উদ্দীনের ছেলে এবং জামিরুলের চাচাতো ভাই আক্তারুল ইসলাম। মামলা তুলে নিতে রাজি না হওয়ায় মর্জিনাকে বেধড়ক মারপিঠ করেন আক্তারুল। পরে প্রতিবেশীরা গিয়ে মর্জিনাকে উর্দ্ধার করে ওই রাতেই গাংনী হাসপাতালে ভর্তি করেন। গাংনী থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মর্জিনা বলেন, জামিরুলের প্রেমের টানে সংসার ছেড়েছি। কিন্তু এখন সে আমাকে স্ত্রীর মর্যাদা দিচ্ছে না। উপরন্তু আমার গর্ভের সন্তান নষ্ট করেছে। তাই সুবিচারের আশায় আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।

অপরদিকে মারধরের ঘটনায় আক্তারুল ও জামিরুলের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলার প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান মর্জিনা খাতুন। তবে অভিযোগের বিষয়ে আক্তারুল ও তার ভাই জামিরুলের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।