সোয়া লাখ ফোর্স মোতায়েনের পরিকল্পনা, সেনাবাহিনী নেই

 

স্টাফ রিপোর্টার: ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের প্রথম ধাপে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২২ মার্চ। এ নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে রেকর্ড পরিমাণ ফোর্স মোতায়েনের পরিকল্পনা করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সূত্রগুলো জানিয়েছে, আগামী ৩ মার্চ নির্বাচন উপলক্ষে বিভিন্ন বাহিনীর সাথে আইনশৃঙ্খলা বৈঠকে বসবে নির্বাচন কমিশন। বৈঠকটি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) মিলনায়তনে ওইদিন সকাল ১১টায় অনুষ্ঠিত হবে।

বৈঠকের কার্যপত্র থেকে জানা গেছে, প্রথম ধাপে ৬৩৯টি ইউপিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রায় ৭ হাজার ভোটকেন্দ্র রয়েছে। এক্ষেত্রে নির্বাচনের দিন সাধারণ ভোটকেন্দ্রে ১৭ জন করে পুলিশ ও আনসার মোতায়েনের পরিকল্পনা নিয়েছে ইসি। আর ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ফোর্স রাখার পরিকল্পনা রয়েছে ১৯ জন করে। অর্থাৎ নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রেই ফোর্স থাকছে ১ লাখ ২০ হাজারের মতো।
তবে এ নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে কার্যপত্রে কিছু উল্লেখ করা হয়নি। এতে বলা হয়েছে, ২০১১ সালের ইউপি নির্বাচনের সময় ৱ্যাব, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, বিজিবি, কোস্টগার্ড এবং সীমিত পরিসরে সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীর মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে রাখা হয়েছিলো। এবার পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে প্রতি ইউনিয়নে ১টি করে ৬৩৯টি মোবাইল ফোর্স, প্রতি তিন ইউপির জন্য স্ট্রাইকিং ফোর্স রাখার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
অন্যদিকে প্রতি উপজেলায় ২টি করে ৱ্যাবের মোবাইল টিম ও ১টি স্ট্রাইকিং টিম এবং প্রতি উপজেলায় ২ প্লাটুন বিজিবি মোবাইল ও ১ প্লাটুন স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে রাখার কথা ভাবা হচ্ছে। আবার উপকূলীয় অঞ্চলে প্রতি উপজেলার জন্য কোস্টগার্ডের ২ প্লাটুন মোবাইল ফোর্স ও এক প্লাটুন স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকছে। যারা ভোটের দুদিন আগে থেকে পরে একদিন মোট চারদিনের জন্য নিয়োজিত থাকবে।
এদিকে জেলা প্রশাসক প্রয়োজন মনে করলে ফোর্স পাওয়া সাপেক্ষে অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করতে পারবেন। অন্যদিকে প্রয়োজনে ভোটকেন্দ্রে মেটাল ডিটেক্টর স্থাপনের চিন্তাভাবনাও করা হচ্ছে।
কার্যপত্রে আরো উল্লেখ রয়েছে, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পরদিন থেকে নির্বাচন সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত প্রতি উপজেলায় ১ জন করে ভোটগ্রহণের আগে-পরে চারদিনের জন্য ৩ জন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত করা হবে। এছাড়া একই সময়ে উপজেলা প্রতি ১ জন করে বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটও নিয়োজিত থাকবে। আবার জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খলা সমন্বয় সেল, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কার্যালয়ে মনিটরিং সেল গঠনের পরিকল্পনাও রয়েছে ইসির।
এছাড়া বহিরাগতদের নিষিদ্ধকরণ, বৈধ অস্ত্র প্রদর্শন নিষিদ্ধকরণ, রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনিটরিং সেল, ভিজিল্যান্স ও অবজারবেশন সেল টিম গঠন ছাড়াও নির্বাচনে সন্ত্রাস, মাস্তানদের দৌরাত্ম্য বন্ধকরণের করণীয় নির্ধারণের পরিকল্পনাও রয়েছে কার্যপত্রে।
সব মিলিয়ে প্রথম ধাপে দেড় লাখের মতো ফোর্স নির্বাচনী মাঠে নিয়োজিত থাকবে। ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার সহকারী সচিব আশফাকুর রহমান জানান, ৩ মার্চের বৈঠকে উপস্থিত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সব বাহিনীর প্রধানদের চিঠি দেয়া হয়েছে। যার সাথে বৈঠকের কার্যপত্রও রয়েছে। তবে সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারকে দেয়া হয়েছে অনুলিপি। অর্থাৎ তিনি বৈঠকে উপস্থিত থাকতেও পারেন, নাও পারেন বলে মন্তব্য আশফাকুর রহমানের।