সুখ সাগর পেঁয়াজের সুখে ভাসছে মুজিবনগরের কৃষকরা

মাজেদুল হক মানিক/শেখ সফি: সুখ সাগর পেঁয়াজের সুখে ভাসছে মেহেরপুরের চাষিরা। গেলো তিন বছর লোকসানের পর এবার পেঁয়াজ চাষিদের হাতে ধরা দিয়েছে সুখ নামক সেই কাঙ্খিত দাম। এক বিঘা পেঁয়াজ বিক্রিতে লাভ হচ্ছে ৩০-৪০ হাজার টাকা। এ জাতের পেঁয়াজ সংরক্ষণ ও আবাদ ছড়িয়ে দিতে পারলে আমদানি নির্ভরতা কমানো সম্ভব বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
মুজিবনগর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় চলতি মরসুমে ৭৬০ হেক্টর জমিতে সুখ সাগর পেঁয়াজ আবাদ হয়। দেশীয় জাতের চেয়ে আকারে অনেক বড় হওয়ায় ফলন বিঘায় (৩৩ শতক) দেড়শ থেকে দুইশ’ মণ। বছর বিশেক আগে সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় চাষিদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিলো সুখ সাগর জাতের পেঁয়াজ বীজ। বর্তমানে এ এলাকার চাষিরা নিজেরাই বীজ উৎপাদন করছেন।
মুজিবনগর উপজেলার মানিকদিয়া গ্রামের আজির উদ্দীন বলেন, চলতি বছরে দুই বিঘা জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করি। খরচ হয়েছে প্রায় ৮০ হাজার টাকা। পেঁয়াজ তোলার আগেই পাইকার ব্যাপারীদের কাছে বিক্রি করেছি। এতে পেঁয়াজ তোলার খচরও সাশ্রয় হয়েছে। দুই বিঘা জমিতে লক্ষাধিক টাকা লাভ হয়েছে। ভবরপাড়া গ্রামের কৃষক শ্যামল মন্ডল বলেন, গত বছর এক বিঘা জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করে ৩০ হাজার টাকার লোকসান হয়। এবার সেই জমিতে ৪০ হাজার টাকা লাভ হয়েছে। ক্ষেত থেকে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ২০-২৫ টাকা দরে বিক্রি করেছি।
জানা গেছে, স্থানীয় তাহেরপুরী পেঁয়াজের মতোই আবাদ করা হয় সুখ সাগর জাতের পেঁয়াজ। তবে সেচ ও রাসায়নিক সার বেশি প্রয়োগ করতে হয়। আবাদ খরচ বেশি হলেও ফলন দেশীয় পেঁয়াজের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি। প্রতি বছরই সুখ সাগর পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়। কিন্তু দেশীয় পেঁয়াজের মতো দীর্ঘদিন ধরে ঘরে রাখা যায় না। দুই তিন মাস পরেই পচন ধরা শুরু করে। ফলে পেঁয়াজ উত্তোলনের পরপরই বিক্রি করতে হয়। এতে লোকসানের মুখে পড়েন কৃষকরা। পেঁয়াজ উত্তোলনের পর হিমাগারে সংরক্ষণ করতে পারলে আরও ভালো দরে বিক্রি করা যায়। সংরক্ষণ ও সারাদেশে এ জাতের পেঁয়াজ আবাদ বৃদ্ধি করতে পারলে দেশের চাহিদা মেটানো সম্ভব বলে মনে করেন কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তারা।
মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. আখতারুজ্জামান বলেন, সারাদেশে সুখ সাগর জাতের পেঁয়াজ আবাদ ছড়িয়ে দিতে কৃষি বিভাগের বিভিন্ন দফতরে আলোচনা করা হচ্ছে।