সিঙ্গাপুরে চাকরি হারানোর শঙ্কায় বাংলাদেশি শ্রমিকরা

স্টাফ রিপোর্টার: উগ্রপন্থায় দীক্ষিত হওয়ার দায়ে ২৬ বাংলাদেশি শ্রমিককে সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফেরত পাঠানোর পর আতঙ্কে ভুগছেন দেশটিতে কর্মরত অনেক বাংলাদেশি। স্তব্ধতা আর লজ্জার পাশাপাশি অনেকে প্রান্তিকীকরণের শিকার হওয়ার শঙ্কার কথা প্রকাশ করেছেন। তাদের শঙ্কা, সিঙ্গাপুরে তাদের এখন থেকে ভিন্ন চোখে দেখতে পারে মানুষজন। ফলে চাকরি হারানোর ঝুঁকিও তৈরি হয়েছে। এ খবর দিয়েছে সিঙ্গাপুরের স্ট্রেইট টাইমস। পেশাজীবীরা সিঙ্গাপুরের সমাজে নিজেদের অবস্থান নিয়ে চিন্তিত। তারা আশঙ্কা করছেন, স্থানীয়রা তাদের নিয়ে আতঙ্কে ভুগবে এখন থেকে। তথ্য প্রযুক্তি নির্বাহী মারুফুজ্জামান (৩৬) বলেন, ‘আমি চাই না আমার স্থানীয় সহকর্মীরা ভাবুক যে আমি খারাপ হতে পারি। তারা যদি আমার কাছ থেকে দূরে সরে থাকে, আমাদের একসাথে কাজ করাটা দুরূহ হয়ে ঠেকবে।’
কিন্তু নির্মাণ ও মেরিন খাতে কর্মরত নীল পোশাকধারী বাংলাদেশি শ্রমিকরা আরও উদ্বিগ্ন। তাদের চোখেমুখে লজ্জার ছাপ স্পষ্ট। নির্মাণাধীন ভবনের সুপারভাইজার জুলফিকার (৩৮) বলেন, আমরা এখানে কাজ করতে এসেছি, ঝামেলা পাকাতে নয়। আমি তাদের কাণ্ডে লজ্জিত। এমন মোট ২৫ জন বাংলাদেশির সাক্ষাৎকার নিয়েছে স্ট্রেইট টাইমস। তাদের সবার মতো জুলফিকারও মধ্যপ্রাচ্যের জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানান। তিনি সহিংস আদর্শে বিশ্বাসী নন। বাংলাদেশ ও মধ্যপ্রাচ্যে তাদের সন্ত্রাসী হামলাও সমর্থন করেন না তিনি। মেরিন শ্রমিক টুটুল খান (৩৩) বলেন, আমরা এখানে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড করার জন্য আসিনি। আমরা এখানে কাজ করছি ও দেশে টাকা পাঠাচ্ছি। এখানে কাজ করে অর্থ আয়ের সুযোগ তারা গ্রহণ করতে পারেনি। গত দুই মাসে, ২৭ বাংলাদেশি নির্মাণ শ্রমিককে সিঙ্গাপুর থেকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ও মধ্যপ্রাচ্যে সন্ত্রাসী হামলা চালানোর পরিকল্পনা করার অভিযোগ রয়েছে। তাদের মধ্যে একজন ছাড়া বাকি ২৬ জনকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। অবৈধভাবে সিঙ্গাপুর ত্যাগের চেষ্টা করার দায়ে একজনকে কারাগারে রাখা হয়েছে। সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশিরা এখন সচেতনতা বৃদ্ধির উপায় খুঁজছে। বিশেষ করে নির্মাণ শ্রমিকদের সিঙ্গাপুরের আইন নিয়ে সচেতন করার চেষ্টা চলছে বলে জানান সিঙ্গাপুর বাংলাদেশি সোসাইটির প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ শহিদুজ্জামান। তার সংগঠনে ৭০০-৮০০ জন পেশাজীবী রয়েছে। তারা বাংলাদেশ হাইকমিশনের সঙ্গে একত্রে এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে চান।