সমালোচনা করে লেখা ফেসবুকের একটি স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে তুলকালাম ঘটনা ঘটিয়েছেন আলমডাঙ্গা উপজেলা শিক্ষা অফিসার : শহরে সমালোচনার ঝড়

 

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: আলমডাঙ্গা উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে সমালোচনা করে লেখা গল্পকার পিন্টু রহমানের ফেসবুকের একটি স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে তুলকালাম ঘটনা ঘটিয়েছেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষা অফিসার। বিষয়টি শহরে সমালোচনার ঝড় তুলেছে।

জানা গেছে, আলমডাঙ্গা শহরের বাসিন্দা গল্পকার পিন্টু রহমান। কয়েক বছর ধরে বই মেলায় তার গল্প ও উপন্যাস গ্রন্থ বের হচ্ছে। গল্পকার হিসেবে ইতোমধ্যেই দেশে পরিচিতি পেয়েছেন। তিনি সামাজিক কাজেও জড়িত। শুদ্ধ সংস্কৃতি চর্চাকেন্দ্রের সাথে তিনি ওতোপ্রতোভাবে জড়িত। সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মী হিসেবে নিজ শহরেও বেশ পরিচিত তিনি।

জানা যায়,  আলমডাঙ্গার  ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী সিনথিয়া আন্তঃপ্রাথমিক শিক্ষা সপ্তা উপলক্ষে আয়োজিত প্রতিযোগিতায় সঙ্গীতে সারাদেশে ১ম স্থান অধিকার করে। ইতঃপূর্বে সিনথিয়া উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েও ১ম স্থান অধিকার করে। সাধারণত উপজেলা পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হলে জেলা পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে প্রতিযোগিতার আয়োজক উপজেলা শিক্ষা অফিস কম-বেশি আর্থিক সহযোগিতা করে থাকে। বিভাগীয় প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে যাওয়ার সময় জেলা শিক্ষা অফিসও আর্থিক সহযোগিতা করে থাকে। সিনথিয়া জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় ১ম হয়ে মন্ত্রীর হাত থেকে সম্মাননা নিয়ে ঘরে ফিরলেও শিক্ষা অফিস থেকে কোনো আর্থিক সহযোগিতা করা হয়নি। বিষয়টি শহরে বেশ সমালোচিত হচ্ছিলো। এই নিয়ে গত ১০ এপ্রিল পিন্টু রহমান নাম উল্লেখ না করে এক শিক্ষা অফিসারের সমালোচনা করে তার নিজের ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। সেই  স্ট্যাটাসকে আপত্তিকর আখ্যায়িত করে আলমডাঙ্গা উপজেলা শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারী হাসান আলী নিজেও আপত্তিকর কমেন্টস করেন। বিষয়টি নিয়ে মোবাইলফোনে তাদের দুজনের মধ্যে বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে হাসান আলী পিন্টু রহমানকে অফিসে ডেকে নেন।

পিন্টু রহমান জানান, তিনি অফিসে গেলে বিষয়টি নিয়ে পুনরায় উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। সেখানে উপস্থিত সহকারী শিক্ষা অফিসার নূর ইসলাম বিষয়টি মিটিয়ে দেন। বিষয়ে মিটে গেলেও পরে উপজেলা শিক্ষা অফিসার আকবার আলী পিন্টু রহমানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সরকারি দফতরে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের সিংহভাগই মিথ্যা বলে পিন্টু রহমান দাবি করেন।

ফেসবুকে সামান্য সমালোচনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষা অফিসারের এহেন কাণ্ডে শহরে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। সিনথিয়া নাচ-গান শেখে আলমডাঙ্গা কলাকেন্দ্রে। আলমডাঙ্গা কলাকেন্দ্রের পরিচালক ইকবাল হোসেন বলেন, সিনথিয়াকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করা তো দূরের কথা, তাকে উপজেলা পর্যায় থেকেই বাদ দেয়ার ষড়যন্ত্র করেছিলো খোদ এক শিক্ষা অফিসার। সে সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার আজাদ জাহানের হস্তক্ষেপে সিনথিয়া উপজেলা পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পায় এবং দেশসেরা হয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মান রেখেছে। বিষয়টি নিয়ে শহরের বেশ কয়েকটি সামাজিক সংগঠনও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।