শুভ বড় দিন আজ

 

স্টাফ রিপোর্টার: আজ ২৫ ডিসেম্বর, শুভ বড়দিন। খ্রিস্টানদের ঘরে ঘরে আজ উত্সবের আনন্দধারা। বহুবর্ণ আলোকের রোশনাইয়ে ভেসে যাচ্ছে গির্জা, গৃহ-দুয়ার আর অভিজাত হোটেলগুলো। প্রতীকী গো-শালা, ক্রিসমাস ট্রি আর বর্ণময় বাতি দিয়ে উদ্ভাসিত করা হয়েছে। পাপকে ঘৃণা কর,পাপীকে নয় আর ঘৃণা নয়, ভালোবাসো-এই সদা দীপ্ত রহে অক্ষয় জ্যোতিময় আহবান নিয়ে মানুষের মনের রাজা যিশুখ্রিস্ট এদিন আসেন এই জগত্-সংসারে। তাই এদিনে গোটা বিশ্বের মতো বাংলাদেশের খ্রিস্টান সম্প্রদায়ও নানা আনুষ্ঠানিকতায় পালন করছেন তাদের এই সবচেয়ে বড় উত্সব। আজ প্রভাতে গির্জায় বিশেষ প্রার্থনা (খ্রিস্টযোগ) হবে। প্রায় সব বাড়িতেই থাকবে কেক, পিঠা, কমলালেবু, পোলাও-বিরিয়ানিসহ বিভিন্ন ধরনের সুস্বাদু ও উন্নতমানের খাবার-দাবারের আয়োজন। বেড়ানো, ধর্মীয় গান, কীর্তন, অতিথি আপ্যায়ন আর পরমানন্দে দিনটি কাটাবেন তারা।

আজ সরকারি ছুটি। বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন, বেসরকারি টিভি ও রেডিও দিবসের তাত্পর্য তুলে ধরে বিভিন্ন অনুষ্ঠান সম্প্রচার করছে। সংবাদপত্রগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, জাতীয় পার্টি-জেপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সম্প্রদায় পৃথক বাণীতে খ্রিস্টান সমপ্রদায়ের মানুষকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস হলো, ঈশ্বরের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য একজন নারীর প্রয়োজন ছিল। সেই নারীই কুমারী মেরি—মুসলমানদের কাছে যিনি পরিচিত বিবি মরিয়ম হিসেবে। ধর্ম বিশ্বাস বলে, ‘ঈশ্বরের আগ্রহে ও অলৌকিক ক্ষমতায়’ মেরি কুমারী হওয়া সত্ত্বেও গর্ভবতী হন। ঈশ্বরের দূতের কথামতো শিশুটির নাম রাখা হয় যিশাস, যা বাংলায় ‘যিশু’। আজকের এইদিনে জেরুজালেমের বেথলেহেম শহরের এক গোয়ালঘরে জন্ম হয়েছিলো যিশুর। শিশুটি কিন্তু মোটেও সাধারণ শিশু ছিলো না। ঈশ্বর যাকে পাঠানোর কথা বলেছিলেন মানবজাতির মুক্তির জন্য। যিশু নামের সেই শিশুটি বড় হয়ে পাপের শৃঙ্খলে আবদ্ধ মানুষকে মুক্তির বাণী শোনান। তিনি বলেন, ‘ঘৃণা নয়, ভালোবাসো। ভালোবাসো সবাইকে, ভালোবাসো তোমার প্রতিবেশীকে, এমনকি তোমার শত্রুকেও। মানুষকে ক্ষমা করো, তাহলে তুমিও ক্ষমা পাবে। যিশুর কথা শুনে অনেকে তাদের মন ফেরান।

বড়দিন উপলক্ষে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের অনেকের ঘরেই বসানো হয়েছে প্রতীকী গো-শালা। বেথলেহেমের গরিব কাঠুরের গোয়ালঘরে যিশুখ্রিস্টের জন্ম। সে কথা স্মরণে রেখেই এটি করা হয়েছে। শিশুদের জন্য ক্রিসমাস পার্টিসহ নানা ধরনের আয়োজন করা হয়েছে। প্রধান আকর্ষণ হিসেবে সান্তা ক্লজ আসবেন নানা উপহার ও চমক নিয়ে। সান্তা তার ঝুলিতে করে কি নিয়ে আসবেন তার অপেক্ষায় থাকে শিশুরা।