শতবর্ষ পর সূর্যের আলো পাচ্ছে নরওয়ের গ্রামটি…

মাথাভাঙ্গা মনিটর: মনে আছে নরওয়ের সেই গ্রামটির কথা, যেখানে শীতকালে সূর্যালোক পেতে পাহাড়ের ওপর বিশালাকৃতির কয়েকটি কাঁচের প্রতিফলক বসানোর কাজ হচ্ছিলো? সে কাজ শেষ হয়েছে। আর, এরই মধ্যে সুফল পেতে শুরু করেছেন উত্তরাঞ্চলীয় উপত্যকাময় গ্রাম আরজুকানের বাসিন্দারা। যদিও এর অবস্থান সমতলে, আরজুকানকে পার্বত্য শহরতলী বলা যেতে পারে। চারদিকে পাহাড় থাকায় সূর্যালোক পৌঁছায় না সেখানে। হিমালয় থেকে বেশ দূরে হলেও, বছরে ৬ মাস প্রকাণ্ড পাহাড়গুলো সূর্যের মুখ দেখতে দিতো না ওই অঞ্চলের সাড়ে ৩ হাজার বাসিন্দাকে। আরজুকান গ্রামে বিশালাকায় কাঁচের প্রতিফলক বসানোর আইডিয়াটি আজকের নয়। শতবর্ষেরও বেশি সময় আগে যখন গ্রামটির জন্ম তখনই এ বুদ্ধি এসেছিল একাধারে গ্রামটির প্রতিষ্ঠাতা, শিল্পপতি ও প্রকৌশলী স্যাম আইডের মাথা থেকে। কিন্তু প্রযুক্তিগত নানা প্রতিবন্ধকতায় পরবর্তীতে সেটা হয়ে ওঠেনি। স্বপ্ন পূরণে পাহাড়ি পথে কেবল কার স্থাপন করেছিলেন স্যাম। আরও কয়েকটি প্রকল্প সফলভাবে বাস্তবায়ন করেছিলেন। এ একটি কাজই বাকি ছিল। পাহাড়ের ওপর গিয়ে গ্রামটির বাসিন্দারা যাতে সূর্যালোক থেকে পর্যাপ্ত ভিটামিন ‘ডি’ গ্রহণ করতে পারেন, সেজন্য কেবল কার স্থাপনের কথা ভেবেছিলেন তিনি। তা আজও ওই গ্রামের বাসিন্দারা ব্যবহার করেন। এদিকে প্রতিফলক বসানোর ধারণাটি কিছুটা উদ্ভট শোনালেও, সেটাই আজ সত্যি হয়েছে। আরজুকানের সেন্ট্রাল স্কয়ারে সূর্যালোক প্রতিফলিত করতে চারপাশের ৪০০ মিটার উঁচু পাহাড়ের চূড়াগুলোতে কাঁচের বিশাল বিশাল প্রতিফলক বসানো হয়েছে। ১৯০০ সালের দিকে আরজুকানের বাসিন্দা ছিলো মাত্র ৩০০ জন। ১৯১৩ সালে সে সংখ্যা দাঁড়িয়েছিলো ১০ হাজারে। অবশ্য, বহু বছর পরে সে সংখ্যাটা কমতে শুরু করে। মানুষ আরও ভালো সুযোগ-সুবিধা ও কর্মসংস্থানের আশায় শহরে বসতি স্থাপন করে। গ্রামটির থেকে যাওয়া বাসিন্দারা প্রাণচাঞ্চল্যে ভরপুর। এখন তা নিঃসন্দেহে নতুন এক মাত্রা পাবে। এদিকে সেন্ট্রাল স্কয়ারে প্রতিফলিত সূর্যালোক দেখতে বহু মানুষ সমবেত হচ্ছেন।