রোহিঙ্গা সঙ্কটের দায় নিতে মিয়ানমারের অস্বীকৃতি

মাথাভাঙ্গা মনিটর: মিয়ানমার রোহিঙ্গা ইস্যুতে নতুন করে কঠোর অবস্থান জানান দিয়ে এ সঙ্কটের কোনো দায় নিতেও অস্বীকার করেছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অভিবাসী সমস্যা নিয়ে শুক্রবার ব্যাংককে ১৭ দেশের প্রতিনিধিদের বৈঠকে রোহিঙ্গাদের বিষয়টি নিয়ে কোনোরকম দোষারোপ করা হলে তা মেনে নেয়া হবে না বলে স্পষ্ট করে জানিয়েছেন মিয়ানমারের পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের  মহাপরিচালক ও প্রতিনিধি দলের প্রধান হেইন লিন। থাইল্যান্ড এ মাসে মানবপাচারের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করার পর থেকে ৩ হাজারেরও বেশি অভিবাসী ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়ায় আশ্রয় নিয়েছে। কিন্তু এখনো ২৬০০র বেশি অভিবাসী নৌকায় করে সাগরে ভেসে বেড়াচ্ছে বলে ধারণা প্রকাশ করেছে ত্রাণসংস্থাগুলো। এ অভিবাসীদের কিছু কিছু বাংলাদেশি আর বেশিরভাগই মিয়ানমারের নির্যাতিত-নিপীড়িত রোহিঙ্গা মুসলিম।

প্রতিনিধিরা বলছেন, পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। যুক্তরাষ্ট্র এবং জাতিসংঘের প্রতিনিধিরাও বৈঠকে যোগ দিয়েছেন। মিয়ানমারের প্রতিনিধিদলের প্রধান হেইন লিন মানবপাচার রোধে তার দেশ সহযোগিতা করবে বলে জানালেও বলেছেন, নৌকায় ভেসে থাকা অবৈধ অভিবাসী সঙ্কটের জন্য মিয়ানমারকে দোষারোপ করা ঠিক না। অঙ্গুলি নির্দেশে কাজের কাজ কিছু হবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি। ব্যাংককে বৈঠকের উদ্বোধনী বক্তব্যে লিন বলেন, আপনারা আমার দেশকে দোষারোপ করতে পারেন না, কারণ, অভিবাসী সঙ্কটে মিয়ানমারই একমাত্র দেশ নয়। গোটা অঞ্চলটিই মানবপাচারের সমস্যায় জর্জরিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মিয়ানমার অন্যান্য আঞ্চলিক দেশের সাথে এবং আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টায় সহযোগিতা করে যাবে। রোহিঙ্গারা বহুবছর ধরে মিয়ানমারে বাস করে আসলেও তাদের মৌলিক অধিকার ও নাগরিকত্ব দিতে অস্বীকার করে আসছে  দেশটি। রোহিঙ্গা মুসলিমরা রাষ্ট্রীয়ভাবে বৈষম্যেরও শিকার হচ্ছে।

এসব সমস্যার মূল কারণ উদঘাটন করে সমন্বিত উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন বলে মনে করে জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা। বিশ্বের অনেকদেশের নেতারাই মিয়ানমারকে এ সমস্যার সমাধানের আহ্বান জানিয়ে  আসছে। বৈঠকে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দিতে মিয়ানমার সরকারকে ফের আহ্বান জানান জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার প্রতিনিধি। জবাবে মিয়ানমার বলেছে, অবৈধ পথে বিদেশগামীদের নিয়ে যেখানে আলোচনা চলছে, সেখানে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীন সিদ্ধান্ত (রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব)নিয়ে কথা উঠতে পারে না।