রাস্তায় গাড়ি না চলেই হিসাবরক্ষণ অফিসে তেলের ভৌতিক বিল

ঝিনাইদহ সওজের রুলার চলে ড্রাইভার ছাড়াই!
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহ সড়ক ও জনপথ বিভাগে গাড়ি না চালিয়ে লাখ লাখ টাকার তেলের বিল জাল ভাউচার তৈরি করে উঠিয়ে নেয়ার ঘটনা ধরা পড়েছে। এমন একটি সন্দেহজনক বিল আটকে দিয়েছে ঝিনাইদহ হিসাবরক্ষণ অফিস। এ নিয়ে সওজের ড্রাইভার ও কর্মচার্রীদের মাঝে তোলপাড় শুরু হয়েছে। অভিযোগ পাওয়া গেছে নিাইদহ শহরের লাউদিয়া এলাকার তামিম ফিলিং স্টেশন থেকে তেল বিক্রির টাকা আগাম নিয়ে প্রতি মাসেই ২ থেকে আড়াই লাখ টাকার তেলের বিল দাখিল করা হয় ঝিনাইদহ জেলা হিসাবরক্ষণ অফিসে। এভাবে অনেক বিল উত্তোলনও করা হয়েছে। ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগের জেডি-২০ রুলার, ট্রাক যশোর-ট-১৩৬ ও উ-১১-০০০১ নাম্বারধারী ট্রাকে ডিজেল ব্যবহার দেখিয়ে প্রতি মাসেই ভুয়া বিল তুলে নেয়া হচ্ছে। সওজ থেকে অনুমোদন করে পাঠানো তামিম ফিলিং স্টেশনের দাখিলকৃত এ ধরনের একটি সন্দেহজনক বিল ঝিনাইদহ জেলা হিসাবরক্ষণ অফিস আটকে দিয়েছে। এই বিলে জেডি-২০ রুলার গাড়িতে ৪ দিনে ৪৩০ লিটার তেল ব্যবহার দেখানো হয়েছে, যা অস্বাভাবিক ঘটনা।
ঝিনাইদহ জেলা হিসাবরক্ষণ অফিসসূত্রে জানা গেছে, জেডি-২০ রুলার গাড়িতে ২০১৭ সালের ১০ জুন ৩০৩৭ নং স্লিপে ১১০ লিটার, ১১ জুন ৩০২৮ নং স্লিপে ১০০ লিটার, ১২ জুন ৩০৩৮ নং স্লিপে ১২০ লিটার ও ১৪ জুন ৩০২৯ নং স্লিপে ১০০ লিটার তেল ব্যবহার দেখানো হয়েছে। এই বিলগুলো সন্দেহজনক হওয়ায় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে স্থগিত রাখা হয়েছে বলে হিসাবরক্ষণ অফিসের অডিটর আকরাম হোসেন জানান। জেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা রেজাউল ইসলামও ঘনার সত্যতা স্বীকার করেন।
সওজের একটিসূত্রে জানা গেছে, যে গাড়ির নামে পাম্প থেকে তেল ইস্যু হবে সেই গাড়ির ড্রাইারের সাক্ষর তেলের স্লিপের পেছনে থাকবে। কিন্তু ঝিনাইদহ হিসাবরক্ষণ অফিসে দায়ের করা বিলে ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগের জেডি-২০ রুলার গাড়ির ড্রাইভার কোনো স্বাক্ষর করেননি।
রুলারের ড্রাইভার সেলিম হোসেন জানান, বিলের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। তিনি বিলের পেছনে স্বাক্ষরও করেননি। আর যে তারিখে রুলার গাড়ির কাজ দেখানো হয়েছে সেই তারিখগুলোতে রুলার চলেনি বলেও তিনি জানান। অভিযোগ পাওয়া গেছে ঝিনাইদহ সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী সেলিম আজাদ খান, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আমজাদ হোসেন ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম পরস্পরের যোগসজসে এই ভুয়া বিল দাখিল করেছেন।
এ বিষয়ে উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আমজাদ হোসেন জানান, ‘আমি বিলের বিষয়ে কিছুই জানি না। আমার চাকরি আর ৪ মাস আছে। আমি এ সব কাজের সাথে নেই।’ বিলের বিষয়ে কথা হলে উপ-সহকারী প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম (বর্তমান কুষ্টিয়া সওজে কর্মরত) জানান, নির্বাহী প্রকৌশলীর নির্দেশে পাম্প থেকে টাকা নিয়ে কর্মচারীদের ঈদ বোনাস দেয়া হয়েছিলো। সেই টাকা সমন্বয় করতেই এই বিল জমা দেয়া হয়েছে।