রাবিতে ফের ছাত্রলীগ নেতার রগ কেটেছে শিবির

প্রতিবাদে বিক্ষোভ সড়ক অবরোধ

 

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শরিফুল ইসলাম সাদ্দামের পায়ের রগ কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় আরেক সাবেক ছাত্রলীগকর্মী গোলাম রব্বানী তুফানের পায়ে গুলি করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে ধরমপুর ছৈমুদ্দিনের মোড়ে এ নৃশংস হামলার ঘটনা ঘটে।

এদিকে ঘটনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ইসলামী ছাত্রশিবিরের ক্যাডারদের দায়ী করে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। পরে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়ক একঘণ্টা অবরোধ করে রাখে।

প্রসঙ্গত, এর আগে গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগকর্মী ইমাম মেহেদী হাসানের, ২৩ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ আল তুহিনের রগ কেটে দিয়েছিলো দুর্বৃত্তরা। তারা সকলেই প্রাণে বাঁচলেও প্রতিবন্ধী জীবন কাটাচ্ছেন। গতকালের নৃশংস হামলার শিকার ছাত্রলীগ নেতা শরিফুল ইসলাম সাদ্দাম গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

পুলিশ ও হাসপাতালসূত্রে জানা যায়, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সাদ্দাম, তুফান ও কৌশিক নামে আরেক ছাত্রলীগকর্মী একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় করে ক্যাম্পাসে ফিরছিলেন। অটোরিকশাটি ছৈমুদ্দিনের মোড়ে পৌঁছুলে অজ্ঞাতনামা ৬/৭ জন দুর্বৃত্ত তাদের লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে। এরপর তারা সাদ্দামকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে এবং বাম পায়ের রগ কেটে দিয়ে পালিয়ে যায়। এ সময় দুর্বৃত্তদের ছোড়া একটি গুলি তুফানের বাম পায়ে বিদ্ধ হয়। তবে কৌশিক দৌড়ে পালিয়ে আত্মরক্ষা করতে সক্ষম হন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ সাদ্দাম ও তুফানকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। তাদের অবস্থা আশংকাজনক বলে জানা গেছে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নগরীর মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসএম আবদুস সোবহান বলেন, ঘটনার পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও আশেপাশের এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। তবে বিকেল পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজের জরুরি বিভাগের চিকিত্সক ডা. আহম্মেদ তারেক বলেন, আহতরা শঙ্কামুক্ত নন। তাদের শরীরে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। সাদ্দামের পিঠে, মাথায় ও বাম পায়ে গুরুতর জখম রয়েছে। এছাড়া তার (সাদ্দাম) বাম পায়ের রগ কেটে দেয়া হয়েছে।

এদিকে হামলার ঘটনায় ইসলামী ছাত্রশিবিরের ক্যাডাররা জড়িত বলে দাবি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। ঘটনার প্রতিবাদে দুপুর ১টার দিকে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এরপর তারা ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়ক একঘণ্টা অবরোধ করে রাখে। খবর পেয়ে প্রক্টর ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান। তাদের আশ্বাসে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা অবরোধ প্রত্যাহার করেন।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান রানা বলেন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের ক্যাডাররা পরিকল্পিতভাবে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর চোরাগোপ্তা হামলা চালাচ্ছে। জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করা না হলে আমরা আরো কঠোর আন্দোলন করবো। তবে হামলার বিষয়টি অস্বীকার করে ছাত্রশিবিরের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার তথ্য সম্পাদক জিয়াউদ্দিন বাবলু বলেন, দলীয় কোন্দল থেকে এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে ছাত্রশিবিরের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করছে ছাত্রলীগ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তারিকুল ইসলাম মিলন বলেন, বার বার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের রগ কাটার ঘটনা নজিরবিহীন। এ ধরনের ঘটনা অপ্রত্যাশিত ও কাপুরুষোচিত। আমরা এ ধরনের হামলা প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছি।